নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ১৫টি রাজনৈতিক দল চায় নতুন ইসি গঠনে ভূমিকা রাখতে

0

be5c2c39e3f7542b9e5dcde622140e4d-5876687d8a358

দিনবদল নিউজ: নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে অপেক্ষায় আছে আরও অনেক দল। নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলিয়ে অন্তত ১৫টি রাজনৈতিক দল চায় নতুন ইসি গঠনে ভূমিকা রাখতে। দলগুলো নিজস্ব পরামর্শ পৌঁছে দিতে চায় রাষ্ট্রপতির কাছে। এসব দলের প্রত্যাশা, ইতোমধ্যে ৪দফায় সংলাপে অংশ নেওয়া ২৩টি দলের মতো তারাও রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পাবে।

নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে এখনও ডাক পায়নি ১৭টি দল। এই দলগুলো হচ্ছে, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, গণফ্রন্ট, এনপিপি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও জাকের পার্টি।

নিবন্ধিত দলের বাইরে কর্মসূচিতে সক্রিয় গণসংহতি আন্দোলনও চায় ইসি গঠনে ভূমিকা রাখতে। এ লক্ষ্যে দলটি প্রস্তুতিও শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গণসংহতি আন্দোলন ইসি গঠনে প্রস্তাবনা তুলে ধরবে।

ডাক না পাওয়া নিবন্ধিত দলগুলোর দায়িত্বশীলরা বলছেন, রাষ্ট্রপতি একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ইসি গঠনে জোর দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আশা করছেন, নতুন ইসি গঠনে দলগুলোর ঐক্যসাধিত হবে। তারা বলছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের ডাকবেন। ইসি গঠনে তাদের প্রস্তাবনাগুলোও বিবেচনা করবেন। যদিও বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেসব দল ডাক পায়নি, সেসব দল আগ্রহ প্রকাশ করলেই কেবল তাদের ডাকা হবে।’

জানতে চাইলে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির চিঠি পাইনি, আমরা অপেক্ষা করছি। তবে এরই মধ্যে আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তিনি ডাকলেই আমাদের প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মোটামুটি ড্রাফট করেছি। এগুলো এখনই বলতে চাই না।’

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবও আছে, কিন্তু রাষ্ট্রপতি না ডাকলে কিভাবে বলি? তবে আমরা চাই, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। এই কমিশন এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে করতে হবে, যেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।’

বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ পেলেই নতুন ইসি গঠন নিয়ে আমাদের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি শুরু করব।’ তবে এরই মধ্যে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন জানান, তারাও অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু বঙ্গভবনের আমন্ত্রণ না পৌঁছালে তারা ইসি গঠনে কোনও ভূমিকার কথা বলবেন না।

আমন্ত্রণ পেলেই অবস্থান জানাতে বঙ্গভবনে যাবেন—এমন মন্তব্য বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এএইচ এম কামরুজ্জামান খানের। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে বিএনপির প্রস্তাব থেকে বেশি পার্থক্য হবে না, তবে রাষ্ট্রপতি তো ডাকতে হবে। ডাকলে যাব।’

একই মনোভাব প্রকাশ করলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাছ। তিনি বলেন, আগে দাওয়াত আসুক, তারপর।

নিবন্ধিত দলের বাইরে অনিবন্ধিত দলগুলোরও প্রত্যাশা, সক্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রপতি ইসি গঠনে তাদের কথা শুনবেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য গণসংহতি আন্দোলন। দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ইসির সময় শেষ পর্যায়ে। এই মুহূর্তে, একটা মিনিমাম গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐকমত্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেটা কেবল রাষ্ট্রপতি বললেই হবে না, রাজনৈতিক আয়োজনও দরকার। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সমন্বয়ে, ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বাদ দিয়ে ইসি গঠন করতে হবে।’

নিবন্ধন নেই ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) একাংশের। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রস্ততি শুরু করিনি, রাষ্ট্রপতি যদি ডাকেন, তাহলে আমাদের দলের বৈঠক বসবে।’

গত ১৮ নভেম্বর শুক্রবার সর্বপ্রথম নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয় সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি। ওই দিন দলটির প্রধান খালেদা জিয়া সংলাপের উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রপতিকে আহ্বান জানান। ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৫টি রাজনৈতিক দলকে ইসি গঠন ইস্যুতে আলোচনার জন্য বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এদিকে নিবন্ধন স্থগিত থাকা জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করলেও সাড়া পায়নি।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *