সোনারগাঁওয়ে শুরু এশিয়ার ২য় বৃহত্তম লোকশিল্প মেলা

0

1484287458_0

দিনবদল ডেক্স: বহু স্মৃতি বিজড়িত আদি মধ্যযুগের রাজধানী সোনারগাঁও। এক সময়ে ‘সুবর্ণ গ্রাম’ , পরর্বতীকালে সোনারগাঁও বিখ্যাত হয়েছিল । ১৯৭৫ সালে শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিন সোনারগাঁওয়ে সৃষ্টি করেছিলেন ‘ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন’। একে কেন্দ্র করে হাজারো দেশী-বিদেশী মানুষের ঢল নামে সোনারগাঁওয়ে । চারু ও কারুশিল্প খ্যাত প্রাচীণ বাংলার রাজধানী এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মাসব্যাপী লোকশিল্প মেলা শুরু হচ্ছে শনিবার।

লোকজ নৃত্য, গ্রামীণ পার্বনের প্রদর্শনী ও আবহমান বাংলার চিরায়িত সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য পরিবেশে ও শীর্তাত মাঘের সকালে লোকজ উৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদ্দুজামান নূর। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ – আল-কায়সার, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, সহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র পোপ।

লোকজ উৎসবকে সামনে রেখে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন মেলার প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন করেছেন। আবহমান কালের লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবন, সংরক্ষণও বাজারজাত করণই ছিল শিল্পচার্যের লক্ষ্য। সেই মহান উদ্দেশ্যেই এখানে নির্মিত হয়েছে লোকশিল্প গ্যালারী ও গ্রামীণ কেন্দ্র, জয়নুল আবেদীন স্মৃৃতি যাদুঘর ও নকশী কাঁথা সংগ্রহশালা, গবেষণা, ঐতিহ্যের নিদর্শন সংগ্রহ,লাইব্রেরী।

1484287458

চিরায়ত বাংলাদেশের সংষ্কৃতিকে সামনে রেখে ‘এক নজরে বাংলাদেশ’ তৈরীর চেষ্ঠা চলছে। একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার, চারিদিকে সমৃদ্ধ লেক, লেকে ময়ুর পঙ্খী-নাও, কাঠ ও বাশের সাঁকে, গায়ের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ, লেকের মাঝখানে দ্বীপ, চারিদিকে হিজম তলার গাছের সারি, একপাশে লোকশিল্পীদের তৈরী বিভিন্ন লোকশিল্পজাত পণ্যের বিক্রয় কেন্দ্র। এবারে ১৯৩টি দোকান বসবে মেলায়। মেলার বাজেট প্রাক্কলন হিসাবে ধরা হয়েছে ৬৫ লাখ টাকা।

মাসব্যাপী লোকজ মেলায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান মালায় থাকছে – লোকজ নাটক, লোক কাহিনীর যাএাপালা, বাউল গান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ারী গান, জারিগান, সারিগান, হাছন রাজার গান, লালন সংঙ্গীত, মাইজভান্ডারী গান, মুশিদীগান, আলকাপ গান, গাঁেয় হলুদের গান, রাধা রমনের গান, বানদরবান,কমলগঞ্জের –মনিপুরী, ক্ষুদ্র –নৃ-গোষ্ঠীর সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান,শরিয়তি- মারফতি গান,লোকজ কবিতা,ছড়া পাঠের আসর, পুথিঁ পাঠ, গ্রামীন খেলা, লাঠি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো,লোকজ জীবন প্রর্দশনী,লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি। খই,উড়খা, কদমা, পিয়াজু,নিমকী, জিলিপির মৌ মৌ গদ্ধে আর বাঁশির পোঁ পোঁ শদ্বে লোকজ মেলা সরগম হয়ে উঠবে।

মাসব্যাপী এই লোকজ মেলাটি এশিয়ার ২য় বৃহত্তম মেলা। কথা হয় ফাউন্ডেশনের পরিচালক রবীন্দ্র গোপের সাথে, তিনি বলেন-‘দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লুপ্ত প্রায় লোকজ ঐতিহ্যের অনন্য উপাদান পুনরুদ্ধার ও নতুন প্রজন্মকে তার সাথে পরিচয় করানোর প্রচেষ্ঠায় ফাউন্ডেশন প্রতিবছর আয়োজন করেছে লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। গ্রাম বাংলায় ছড়িয়ে থাকা অবহেলিত কারুশিল্পী, লোক সংঙ্গীত শিল্পীদেরকে তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিভা বিকাশ ও প্রকাশের সুযোগ করে দেয়াই এ মেলা ও লোকজ উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *