শিশুদের ভাইরাস জ্বর হলে

0

viral-fever_39923_1487478959

দিনবদল ডেক্স: বিবর্ণ শীত বিদায় বেলায়ও রেখে যায় তার রুক্ষ ঠাণ্ডার রেশ। হালকা শীতের মাঝে আবার হালকা গরম, সব মিলিয়ে এখন অন্যরকম আবহাওয়া চলছে। তাই ঠাণ্ডা ও গরম মিলিয়ে শিশুরা এসময়টা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এরকম আবহাওয়ায় শিশুরা ঠাণ্ডা জ্বর বা ভাইরাস সংক্রমিত জ্বরে আক্রান্ত হয়। যা সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

এছাড়া এসময় চারপাশে ডেঙ্গুর প্রকোপও দেখা যায়। তাই এটা নিয়ে চিন্তিত না হয়ে একটু সাবধান হলেই নিরাপদ থাকা সম্ভব।

জ্বরের কারণ :

আবহাওয়ার পরিবর্তন : এখন যাদের জ্বর হচ্ছে তাদের মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে। হালকা বাতাস, ধুলো, গরম বা ঠাণ্ডা মিলিয়ে এসময়টা জ্বর হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। কম রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের এ জ্বরের ঝুঁকি বেশি থাকে।

ঘাম : শিশুরা খুব বেশি ঘামে আর সেই ঘাম গায়েই শুকিয়ে যায়। তা থেকেও শিশুর অনেকের ঠাণ্ডা লাগে। এই ঠাণ্ডা থেকেই আবার সর্দি কিংবা ভাইরাসজনিত জ্বর হতে পারে।

তবে সর্দি কিংবা ভাইরাসজনিত জ্বর হলে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন জরুরি। সেগুলো নিম্নে দেয়া হলো :

জ্বর হলে স্পঞ্জিং : জ্বর হলে প্রাথমিকভাবে স্পঞ্জিং করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই পুরো শরীর ভেজা নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে একটানা কয়েকবার আলতো করে মুছে দিলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়।এসময় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করতে হবে। শিশুদের গামলা ভর্তি পানিতে বসিয়ে স্পঞ্জ করাই ভালো।

বিশ্রাম : জ্বরের সময় যতটা সম্ভব শিশুকে বিশ্রামে রাখতে হবে।

খাবার : স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। এছাড়াও লেবুর রস মুখে রুচি আনতে সাহায্য করে তাই লেবু বা লেবুর শরবত শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।

ফলের মধ্যে আনারস, পেয়ারা বা আমলকি জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে।

সচেতনতা :

* ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার যেমন : আইসক্রিম, ফ্রিজের পানি, কোল্ড ড্রিঙ্কস একেবারেই খাওয়া যাবে না।

* জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্য শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় সাবধান থাকতে হবে।

* হাঁচি দেয়ার সময় বা নাকের পানি মুছতে হলে রুমাল বা টিসু পেপার ব্যবহার করতে হবে এবং তা যেনো অন্য কেউ ব্যবহার না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

* যেখানে সেখানে কফ, থুথু বা সর্দি একদম ফেলা যাবে না। এতে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারে।

* স্বাস্থ্যকর, খোলামেলা, শুষ্ক পরিবেশ, যেখানে আলো বাতাস বেশি আসে এমন কক্ষে ক্ষুদে রোগীকে রাখতে হবে।

চিকিৎসা : অধিকাংশ সময়েই এ ধরণের ভাইরাস জ্বর তিন থেকে পাঁচদিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। তাই এই জ্বর নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। জ্বর কমানোর জন্য প্রাথমিকভাবে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ দেয়া যেতে পারে। তবে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই ভালো।

শিশু বিশেষজ্ঞ ড. সাখাওয়াত আলম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *