শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস বিদ্যুৎ জরুরি

0

gas_40007_1487539447

দিনবদল ডেক্স: শিল্প-কারখানায় গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের দ্রুত সংস্কার চায় দেশে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন (বিজিএমইএ)।

উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা পিছিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে বিজিএমইএ নেতারা বলেন, বাধ্য হয়ে বিকল্প উপায়ে পোশাক শিল্পের ডায়িং ও ওয়াশিং কারখানার বয়লার চালাতে হচ্ছে।

কিন্তু এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য ২০২১ সালের মধ্যে পোশাক রফতানি থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে।

অপরদিকে বস্ত্র খাতের সংগঠন বিটিএমএ’র উদ্যোক্তারা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে দেশে শিল্প সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। কারখানাও স্থানান্তর সম্ভব হচ্ছে না। এর দ্রুত সুরাহা হওয়া দরকার।

তা না হলে রফতানিমুখী পোশাক শিল্পই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ পোশাক খাতের অন্যতম পশ্চাৎপদ শিল্প হচ্ছে টেক্সটাইল খাত। এটি পুরোপুরি গ্যাস-বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল।

রোববার কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘ঢাকা অ্যাপারেল সামিট-২০১৭’ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪তম আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস মেশিনারি প্রদর্শনী উপলক্ষে বিজিএমইএ এবং বিটিএমএ পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাক কারখানাগুলোয় গ্যাস-বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংকটের দাবিটি অনেক পুরনো। আজও একই দাবি করছি। কারণ আমাদের সামনে লক্ষ্য হচ্ছে, পোশাক শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।

২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। তবে এজন্য সরকারকে নীতিগত সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার আশ্বস্ত করেছে, ২০১৮ সালের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ মিলবে। আমরা ভালো কিছুর জন্য এ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই। তবে সার্বক্ষণিক কারখানা সচল রাখতে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহও জরুরি।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও গার্মেন্ট উদ্যোক্তা এমএ সবুর বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাকে এখন কারখানার বয়লার চালাতে হচ্ছে ডিজেল ও কয়লা দিয়ে। কিন্তু এতে খরচ পড়ছে খুব বেশি। কয়লাভিত্তিক বয়লার চালাতে প্রতি ইউনিটি খরচ পড়ছে ৬ টাকা।

আর ডিজেলভিত্তিক বয়লারে খরচ হচ্ছে ৪৬ টাকা। অথচ এটি সার্বক্ষণিক গ্যাসনির্ভর করা সম্ভব হলে তা মাত্র আড়াই থেকে সাড়ে তিন টাকা খরচ পড়ত। ফলে উৎপাদন খরচও কমে আসত।

অন্যদিকে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি তপন চৌধুরী বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে দেশে শিল্প সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এ কারণে কারখানা স্থানান্তরও সম্ভব হচ্ছে না।

এর দ্রুত সুরাহা না হলে রফতানিমুখী পোশাক শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ পোশাক খাতের অন্যতম পশ্চাৎপদ শিল্প টেক্সটাইল খাত পুরোপুরি গ্যাস-বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল।

বিনিয়োগের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় গ্যাস, বিদ্যুতের সংকট এবং জমির স্বল্পতার কারণেই এ অবস্থা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তিনি দাবি করেন, গ্যাসের দাম বাড়লে স্পিনিং মিলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, যা দেশের রফতানি খাতকে আন্তর্জাতিক বাজারে কঠিন প্রতিযোগিতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *