ভিয়েতনামের কাছে অস্ত্র বিক্রি করলে চীন আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না
দিনবদল ডেক্স: মাসুদ আজহারকে জঙ্গি ঘোষণায় টালবাহানা করা বা আন্তর্জাতিক পরমাণু ক্লাবে ভারতের প্রবেশে বাধা দেওয়াই নয়, এবার সরাসরি ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই যেন হুঁশিয়ারি দিল চিন। চিনের বিস্ফোরক দাবি, ভিয়েতনামকে অস্ত্র বিক্রি করলে বেজিং আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। নয়াদিল্লি ও হানয়ের মধ্যে সামরিক ও কৌশলগত বন্ধুত্বই এখন বেজিংয়ের কাছে চোখের বালি হয়ে উঠেছে। এক নয়, এই নিয়ে একাধিকবার নয়াদিল্লিকে সতর্ক করল বেজিং। বেজিংয়ের সাফ বক্তব্য, তাদের কথা মতো না চললে ভারতের উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ভারতে হামলারও প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছে চিন।
(চিনকে ‘শিক্ষা’ দিতে ভিয়েতনামকে ‘আকাশ’ মিসাইল দিচ্ছেন মোদি)
ভিয়েতনামকে আকাশ মিসাইল, সুখোই যুদ্ধবিমান-সহ একাধিক দেশীয় সামরিক সরঞ্জাম বিক্রিতে উৎসাহ দেখিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপেই বেজায় চটেছে চিন। এতদিন হাবেভাবে সে কথা বুঝিয়ে দিলেও এবার সরাসরি সংঘাতের হুমকি দিল চিন। সরকারি সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক রিপোর্টে চিনের বক্তব্য, ‘নয়াদিল্লি যদি সত্যি ভেবে থাকে ভিয়েতনামকে সামরিক সহায্য করলে চিনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে, তাহলে চিনও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।’ সাম্প্রতিক সময়ে এমন কড়া ভাষায় নয়াদিল্লির সমালোচনা শোনা যায়নি বেজিংয়ের মুখে।
(চিনের বিরুদ্ধে সমরাস্ত্র মজুত করছে ভিয়েতনাম)
চিনের দাবি, ভারত যদি নিয়ম মতো কোনও বন্ধু রাষ্ট্রকে অস্ত্র সরবরাহ করত, তাতে বেজিংয়ের কোনও আপত্তি ছিল না। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশ, চিনকে আক্রমণের লক্ষ্যেই নাকি ভারতের সঙ্গে হানয়ের সামরিক সমঝোতা বাড়ছে। এমনটা চললে যে শুধু এশিয়ার স্থিতিশীলতাই নষ্ট হবে তা নয়, অসুবিধায় পড়বেন প্রত্যেক ভারতবাসী। সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিনের এই দাবি কার্যত যুদ্ধের হুঙ্কার! চিনের কমিউনিস্ট সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস-এর দাবি, চিনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে এমন কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারতের সামরিক বন্ধুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছে না বেজিং। তার উপর সম্প্রতি অগ্নি সিরিজের দুটি মিসাইলের পাল্লা বাড়িয়েছে ভারত। পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম ‘অগ্নি-৫’ মিসাইল ইউরোপীয় দেশগুলি তো বটেই, এমনকী বেজিংকেও ছাই করে দিতে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছে চিনের কমিউনিস্ট সরকার। আজ এই বিষয়ে চিনের প্রশাসনিক কর্তারা এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও বসছেন বলে জানা গিয়েছে। চিনের অভিযোগ, ভারত সকলের সঙ্গে সমান বন্ধুত্ব রাখুক। চিনকে বেকায়্দায় ফেলতে গিয়ে কোনও কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বিশেষ বন্ধুত্ব’ ভারতের ক্ষতি করতে পারে।
(সীমান্তে ব্রহ্মস মিসাইল মোতায়েন ভারতের, আতঙ্কিত বেজিং)
চিনের হয়ে সবচেয়ে বড় বোমাটি ফাটিয়ে গ্লোবাল টাইমস-এর বিস্ফোরক দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ভিয়েতনাম সফরে গিয়েছিলেন তখন ভারতের কূটনৈতিক মহলের একাংশ তাঁকে চিনের বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়, ভুল বোঝায়। চিনা সংবাদপত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো হয়েছিল, চিনে ডামাডোল তৈরি করতে গেলে ভিয়েতনামের সঙ্গে সুদৃঢ় বন্ধুত্ব রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকেও কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বেজিংয়ের দাবি, ভিয়েতনামকে পাত্তাই দেয় না চিন। তাই ভিয়েতনামকে ‘অস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করে চিনে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করলে ভারতের উন্নয়ন যজ্ঞ স্তব্ধ হয়ে যাবে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।