বিকাশের ক্যাশ আউট বন্ধ চান ব্যাংকাররা

0

Bkash20170205205303

দিনবদল ডেক্স: হুন্ডি ঠেকাতে ব্র্যাক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের ক্যাশ আউট (অর্থ উত্তোলন) বন্ধ করার দাবি করেছেন ব্যাংকাররা।

রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের শীর্ষ ২০ রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠককালে তারা এ দাবি করেন।

জানা গেছে, দেশের জেলা ও উপজেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে বিকাশের মাধ্যমে হুন্ডির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। যার প্রভাবে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিক পতনে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে শীর্ষ ২০ রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে আজ বৈঠকে উপস্থিত ব্যাংকাররা হুন্ডিতে অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রবাহ প্রতিরোধে বিকাশের ক্যাশ আউট (অর্থ উত্তোলন) বন্ধ করার দাবি তোলেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনই বিকাশ বন্ধে সম্মতি দেয়নি। তবে হুন্ডিওয়ালারা যাতে কোনোভাবেই বিকাশ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে না পাঠায় সে ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য বসেছিলাম। তারা দাবি করেছেন, যেহেতু হুন্ডিরা ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশকে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন, সেহেতু বিকাশের ক্যাশ আউট বন্ধ করে দিতে হবে। কিন্তু এ ধরনের দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্মতি দেয়নি। বিকল্প হিসেবে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আগে যেটা ২৫ হাজার টাকা ছিল, সেটা এখন ১০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের বড় অবদান রয়েছে। এর ইতিবাচক ধারা যেন অব্যাহত থাকে, সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সক্রিয় রয়েছে। এ লক্ষ্যে বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া অ্যাপস তৈরি করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিকাশ এতদিন এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও দূতাবাসগুলোর নজরদারিতে এর সত্যতা মিলেছে। এ ধরনের কাজে সম্পৃক্ত থাকায় ইতোমধ্যে ২৫ জনকে জরিমানাও করা হয়েছে।

বর্তমানে ছোট অঙ্কের টাকা পাঠাতে কেউ আর ব্যাংকিং চ্যানেলে যাচ্ছেন না। তারা খুব সহজে স্বল্প সময়ে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে সুর চৌধুরী বলেন, কোনো ব্যাংক ছোট অঙ্কের রেমিট্যান্সে বিনিময়মূল্য নির্ধারণে বিশেষ প্রণোদনা দিতে চায়, তাদের অতিরিক্ত সেই ব্যয় সমন্বয়ে যা খরচ হবে- তা ব্যাংকের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে দেখানোর সুযোগ দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে সবগুলো ব্যাংক মিলে অভিন্ন নেটওয়ার্ক স্থাপনে বিকাশকে ব্যবহারের প্রস্তাব উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ১০০ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের বছরের একই মাসে এ পরিমাণ ছিল ১১৫ কোটি ৬ লাখ ডলার। সে হিসেবে বছরের প্রথম মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১৪ কোটি ১১ লাখ ডলার বা ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫১ শতাংশ কম প্রবাসী আয় আসে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পুরো সময়ে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরে যা ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *