বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী : পুরনো কারাগার ঘুরে দেখার সুযোগ
দিনবদল ডেক্স: দুইশ আটাশ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার আবারও ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। তবে এবার দেখা যাবে না ফাঁসির মঞ্চ ও কনডেম সেল। গতকাল সকালে সাংবাদিকদের কিছু সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ মার্চ কারাগারে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত অংশে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। প্রবেশ মূল্য এক’শ টাকা। এর আগে গত বছর নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে পাঁচদিন এই কারাগারের ভেতরে বিভিন্ন অংশ দেখার সুযোগ হয়েছিল সাধারণ দর্শনার্থীদের। এ ব্যাপারে গতকাল ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ শিরোনামের এই আয়োজনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিন।
আইজি প্রিজন জানান, প্রদর্শনীতে থাকবে ১৭১টি দুর্লভ আলোকচিত্র। আর প্রদর্শনী থেকে পাওয়া অর্থের একটি অংশ কাশিমপুর কারাগারের ‘ডে কেয়ার সেন্টারে’ শিশুদের জন্য খরচ করা হবে।
আইজি প্রিজন জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টায় আলোকচিত্রী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। তিনি জানান, প্রদর্শনী উপলক্ষে ওই তিন দিন কারা ফটক সাধারণ মানুষের জন্য খোলা থাকবে। জনপ্রতি এক’শ টাকা প্রবেশ মূল্যে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভেতরে ঢুকতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
দর্শনার্থীদের ফাঁসির মঞ্চ, কনডেম সেল দেখা প্রসঙ্গে আইজি প্রিজন বলেন, ফাঁসির মঞ্চের জায়গাটি খুব ছোট। ফলে দেখার ব্যাপারে দর্শনার্থীদের সমস্যা হতে পারে। এ কারণেই দর্শনার্থীদের দেখার সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের কয়েকটি বছর কেটেছে এ কারাগারে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এখানেই সংঘটিত হয় জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাযজ্ঞ।‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ শিরোনামে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জার্নি প্রধান নাজমুল হোসেন।
ফাঁসির মঞ্চ ও কনডেম সেল রজনীগন্ধা :সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ফাঁসির মঞ্চ। মূল ফটক পরবর্তী রাস্তার বাম দিকে (পূর্ব-পশ্চিমে রাস্তা) আঁকা-বাঁকা সরু পথ ধরে যেতে হয় ফাঁসির মঞ্চ চত্বরে। প্রস্থে ১৫ হাত, লম্বায় ২৫ হাত। পেছনের অংশ মাটির। মঞ্চ লাগোয়া রজনীগন্ধা কনডেম সেল। দেয়ালে লেখা রয়েছে ফাঁসির সেল। এ সেলে আটটি আলাদা কক্ষ। পাঁচ হাত প্রস্থ সাত হাত লম্বা এসব কক্ষে ছিলেন দণ্ডিত বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীরা। কক্ষগুলোতে কোনো জানালার ব্যবস্থা নেই। সামনের দিকটায় মোটা রডের দরজা। কক্ষের উঁচুতে লাগানো রয়েছে একটি করে এনার্জি সেভিং ভাল্ব। কক্ষের ভেতরে ছোট পরিসরে উন্মুক্ত টয়লেট। এ কক্ষের সামনে ৫/৭ হাত খোলা জায়গা। এখানেই বসানো রয়েছে একটি পানির প্লাস্টিকের ট্যাব। তবে এটা সেলের বাউন্ডারির মধ্যে। তবে কনডেম সেলের উপরে টানানো লোহার জাল। যাতে বাইরে থেকে কেউ কিছু ছুঁড়ে মারলে কোনো অবস্থাতে তা ভেতরে না পড়তে পারে। রজনীগন্ধা সেলে পাশাপাশি বন্দীরা থাকলেও কারো মুখ দেখাদেখির কোনো সুযোগ নেই।