ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেলের ডা: আরিফ দুর্নীতি ও অনিয়ম আর নারী কেলেঙ্গারির পর্ব-১
রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান সুপার ডা. শামসুদ্দোজা আরিফের অনিয়ম ও দুর্নীতি আর নারী কেলেঙ্কারিতে প্রতিষ্ঠানটি এখন প্রায় ডুবতে বসেছে। এখনই প্রশাসনের হস্থক্ষেপ প্রয়োজন।
বিশেষ প্রতিবেদক: রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান সুপার ডা. শামসুদ্দোজা আরিফের অপসারণ দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ডা. আরিফের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তারা এই দাবি জানান।
হাসপাতালের ইনডোর কিংবা আউটডোরে কোনো রোগী নেই। নেই মেডিকেল অফিসার ও কম্পাউন্ডার। তবুও নিজেকে সুপার দাবি করে ডা. আরিফ অবৈধভাবে বেতনভাতা ভোগ করছেন বলেও জানা যায়।
তিনি অধ্যক্ষ থাকাকালীন ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে কোনো হিসাবরক্ষক নিয়োগ না দিয়ে নিজেই সব হিসাব রাখতেন। সে সুবাদে বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানের মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেন।
গত বুধবার দুপুরে ডা. আরিফ তার নিজকক্ষে অপর এক শিক্ষিকাকে নিয়ে অশোভন কাজ করার সময় কলেজের ছাত্রছাত্রী ও অন্য শিক্ষকরা দেখে ফেলেন। পরে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে পড়লে একপর্যায়ে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। ফলে ডা. আরিফের শার্টের কলার, বোতাম ছিঁড়ে যায় এবং তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। এ ব্যাপারে ডা. শামসুদ্দোজা আরিফের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডি করা হয়।
জানা যায়, দুর্নীতি ও অনিয়ম আর এ ধরনের নারী কেলেঙ্গারির একের পর এক ঘটনা করার পরও কিভাবে তিনি প্রতিষ্ঠানে বহাল তবিয়তে থাকতে পারেন এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার ক্ষমতার জোর কোথায় সেটি নিয়েও হচ্ছে আলোচনা ও সমালোচনা। তবে তিনি যেই অপরাধ করুন না কেন তিনি থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়েও হোমিও বোর্ডের কমকতারা এক প্রকার হুমকির মুখে রয়েছে। এত অনিয়মের পরও তার টিকে খোদ কলেজের শিক্ষক, কমকতা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে তার ক্ষমতার উৎস কোথায়।
কলেজের শিক্ষক কমকতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত প্রশাসক কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। তার সঙ্গে বিশেষ সখ্যতা ও ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি দিনের পর দিন দুর্নীতি ও অনিয়ম এমনকি নারী কেলেংকারি ঘটিয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
আরও জানা যায়, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধীনে পরিচালিত বে-সরকারি কোন হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের 65 বছরে উর্ধ্বে কোন ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানে কমরত থাকতে পারবেন না। কিন্তু ডা: আরিফের ক্ষেত্রে তা উল্টো ঘটেছে। তার বয়স 65 এর বেশি হলেও এখনো তিনি দাপটের সাথে সেখানে কমরত ও প্রতিষ্ঠানের সার্বিক দেখভাল করছেন।
প্রকৃতপক্ষে ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক হাসপাতালটিতে এখন কোন আউটডোর বা ইনডোর নেই। নেই কোন মেডিকেল অফিসার, কম্পাউন্ডার, রোগী ভর্তির কোন সুযোগ সুবিধা নাই তিনি উক্ত হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট । অবৈধ ভাবে নিয়োগ নিয়ে তিনি প্রতি মাসে 25 হাজার টাকা কলেজ ফান্ড থেকে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন।
এক গভীর অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষই হাসপাতালের সুপারেনটেনডেন্ট এর দায়িত্ব পালন করবেন। অথচ এক্ষেত্রে বতমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব না দিয়ে তিনিই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সানুগ্রহে উক্ত পদে অবৈধ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা যায় যে, হাসপাতালটিকে তিনি সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে জনৈক্য ফরিদা পারভিনকে রেখেছেন। যেখানে কোন মেডিকেল অফিসারই নেই সেখানে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার কিভাবে তাকে রাখতে পারেন এ প্রশ্নও সবার নিকট।
এমনকি তাকে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য পদেও রেখেছেন। 2008 সালে প্রায় 50 লাখ টাকা খরচ করে 41টি বেড ও একটি প্যাথলজি উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে ডা: আরিফ যেখানে তিনি প্রতি মাসে 54 হাজার টাকা ভাড়া দিতেন। হাসপাতালটির আয় ব্যায়ের ক্ষেত্রে তিনিই সব ভুমিকা পালন করতেন।
গত দশ বছরেও কলেজ ও হাসপাতালটিতে কোন আভ্যন্তরীণ অডিট হয়নি। একটি গৃহপালিত সিএ ফার্মের মাধ্যমে তিনি বার্ষিক অডিট রিপোট তৈরী করে হোমিও বোর্ডে জমা দিয়ে থাকেন। প্রকৃত অডিট হলে তার দুর্নীতি অনিয়ম ফাঁস হয়ে যাবে। এ কারণেই তিনি কোন অডিট করাতেও চান না বলে প্রতিষ্ঠানটির কমকতা কমচারী এবং শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদু্জ্জামান খাঁন কামাল এম.পি বরাবরে 17/01/2017ইং তারিখে একটি অভিযোগ নামা প্রেরণ করেছেন যাহার নং-64। চলবে…