পদ্মা সেতু সকল প্রতিবন্ধকতা জয় করছে বাংলাদেশ : সজীব ওয়াজেদ জয়
দিনবদল ডেক্স: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রতিবন্ধকতা জয় করে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সম্মানহানির চেষ্টা করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে এক নিবন্ধে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, আঞ্চলিক সংযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও বিশ্বব্যাপী আউটসোর্সিংয়ের জন্য একটি কৌশলগত হাব হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান। এটিকে সামনে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ বিশাল আকারের অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প এর একটি প্রধান দৃষ্টান্ত, যা আগামী বছর খুলে দেয়া হবে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করবে পদ্মা সেতু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লিখেছেন, সড়ক ও রেল যোগাযোগ লাইনসহ এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী সেতু। এছাড়া এই সেতুতে উচ্চ চাপসম্পন্ন গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ফাইবার অপটিক লাইনও থাকবে। আধুনিক সংযোগের প্রায় সবকিছুই থাকবে এতে।
‘প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্নের মাধ্যমে দেশের মোট জাতীয় উৎপাদন প্রায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়তে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই সেতু প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে।’
সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘ওই অঞ্চলের ৩ কোটি মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলবে পদ্মা সেতু। এই প্রকল্পের ফলে এসব মানুষের জীবনের আমূল পরিবর্তন ঘটবে; দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসবেন লাখ লাখ মানুষ। দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে কৃষকরা ঢাকায় তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে যেতে পারবেন।’
এছাড়া শরীয়তপুরে একটি হাইটেক পার্ক ও বাগেরহাটে বিমানবন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ফলে এই অঞ্চলের সঙ্গে শুধু রাজধানী নয়, বিশ্বের অন্যান্য অংশেরও সংযোগ তৈরি হবে।
প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বিরত থেকেছে। বাংলাদেশের অনেকেই এই গল্প জানেন।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা লিখেছেন, এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে সেতু থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে; অন্যরা বিশ্বব্যাংকের পথ অনুসরণ করেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের দাবির বিপরীতে কানাডার একটি আদালত এই প্রকল্পে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পায়নি বলে সব অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছে। আদালত বলছে, গুজব এবং উড়ো খবরের ওপর অভিযোগ এনেছে বিশ্বব্যাংক।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ একাই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সেতু নির্মাণে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এই সেতু বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক যে বাংলাদেশের সুনামহানির চেষ্টা করেছে তা কারও ভুলে যাওয়া উচিত নয়।