নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের, উঠান বৈঠকে ভোট প্রার্থনা

0

AL20170214220708

দিনবদল ডেক্স: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালে। নির্বাচনের এখনও দুই বছর বাকি থাকলেও নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু হয়েছে ক্ষমতাসীন দলে। দলের কেন্দ্র থেকে নির্দেশ পৌঁছেছে মাঠ পর্যায়ে। নির্দেশ অনুযায়ী তৃণমূল নেতারা বৈঠক করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে কি বলবেন, কীভাবে ভোট প্রার্থনা করবেন তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।

বৈঠকের পর তারা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সরকারের কয়েক বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। ভবিষ্যতে সরকার আরও কি কি কাজ করবে সেটাও জানান দিচ্ছেন তারা।

৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর হবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। এবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে জনগণের ভোটের প্রয়োজন হবে। এ কারণে আগে ভাগেই মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। দলের বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ গত সপ্তাহে নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায় গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেন। তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন কীভাবে ভোট চাইতে হবে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, কেউ অসুবিধায় পড়লে সহায়তা, সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ বিভিন্ন কৌশলে তৃণমূল নেতাদের ভোট চাইতে বলেন নৌকার পক্ষে।

এ প্রসঙ্গে মাহবুব-উল আলম হানিফ জাগো নিউজকে বলেন, স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে উঠান বৈঠক তো নতুন কিছু নয়। এটা তো রুটিন ওয়ার্ক। এ চিত্র শুধু কুষ্টিয়ার নয়, সারাদেশেই।

তবে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, মার্চে শুরু হবে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ। দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইশতেহার তৈরি হবে। ইশতেহার তৈরির প্রস্তুতি হিসেবে বিগত নির্বাচনী ইশতেহার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ নির্দেশনা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা আরও আগে দিয়েছেন। সাবেক আমলা ও বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে ইশতেহার তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখন প্রতি সপ্তাহেই এলাকায় যাচ্ছেন। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তৃণমূল নেতাদের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করতে বলছেন। সরকারের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন পুস্তিকা, পত্রিকার কাটিং- এ সংক্রান্ত লিফলেট ও সংকলন সরবরাহ করা হচ্ছে। যেগুলোতে সরকারের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নেতাদের উপস্থিতি ও নৌকার পক্ষে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধের কৌশলও গ্রহণ করা হচ্ছে।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, প্রচারে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের গুরুত্ব দিয়ে জেলায় জেলায় চলছে সাংগঠনিক সফর। এ সফরেই মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এমপি-মন্ত্রীরা এখন বিপক্ষ নেতাদের ডেকে মান ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে সফলতাও আসছে।

গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলায় জেলায় সাংগঠনিক সফর শুরু করেন। জেলায় বর্ধিত সভা, কর্মিসভা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মী সম্মেলন করা হচ্ছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকার কথা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের বিষয়ে আগাম তথ্য সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছে। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে প্রার্থীদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি হবে নির্বাচনের আগেই। সরকারের বিভিন্ন সংস্থাসহ দলের বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মতামতও নেয়া হবে এ ক্ষেত্রে। এতে স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে জাগো নিউজকে হানিফ বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে দল কাজ শুরু করেছে। বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফর শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি নিশ্চিতভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমেই দেশের জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাবে। কারণ দেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, শান্তি চায়।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নেতারা বিভাগ, জেলা ও উপজেলা এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়-কর্মিসভা করছে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মানুষকে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করাই মূল লক্ষ্য। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরা এবং ভবিষ্যতে দেশের আরও উন্নয়নের জন্য নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন দলের নেতাকর্মীরা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *