নতুন ব্রেক্সিট বিলের বিপক্ষে ভোট দেবেন বাংলাদেশী বৃটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক

0

b70038ccc07ba6ac562bb1e7f6a1eeb1-57fb12e392991

দিনবদল ডেক্স: ব্রেক্সিট ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের নতুন বিলের বিপক্ষে ভোট দেবেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নিজের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার প্রক্রিয়া শুরুর আগে পার্লামেন্টে এ ভোটাভুটির উদ্যোগ নেওয়া হলো। দ্য ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন (নোটিফিকেশন অব উইদড্রয়াল) নামের বিলটি বৃহস্পতিবার হাউস অব কমন্সে তোলা হয়।

বিলটিতে লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেক্সিট কার্যকরের আলোচনা শুরু করতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি আহ্বান জানানো হবে। এতে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুই বছরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার আলোচনা শুরুর কথা বলা হবে। ২০১৬ সালের জুনে গণভোটের মাধ্যমে ইইউ ত্যাগের পক্ষে এ রায় দেয় ব্রিটিশ নাগরিকরা।

যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন চাইছেন, তার দল যেন এ বিলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে। তবে করবিনের এমন অবস্থানের বাইরে যাওয়া দলের ৩০ বিদ্রোহী এমপি’র সঙ্গে যোগ দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত হওয়া টিউলিপ বলেছেন, ইইউ ত্যাগের ব্যাপারে এ অস্বচ্ছ বিলের পক্ষে ভোট দিতে জোর করা হলে তিনি লেবার পার্টি’র ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।

টিউলিপ বলেন, ‘যারা আমাদের পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত তাদের জন্য একটা বিজয়। আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে আনতে তাদের কথিত ‘পরিকল্পনা’র বিরুদ্ধে আমাদের যথাযথ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সরকার একটি দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার দিকে ধাবিত করছে।’

নর্থ লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড এবং কিলবার্ন এলাকার এই এমপি বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকার তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এই বিতর্কে আমি তাদের পক্ষে থাকব। সরকার পার্লামেন্টে কী বিল আনে, সে ব্যাপারে আমার নজর থাকবে। লেবার পার্টিতে আমার সহকর্মীদের আনা যেকোনও সংশোধনীর ক্ষেত্রেও অবশ্যম্ভাবীভাবে এটা প্রযোজ্য। এসব পদক্ষেপ যতক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা, রেসিডেন্সিয়াল স্ট্যাটাস ও জীবনযাত্রার মানের মতো বিষয়গুলোর সুরক্ষা না দেবে; ততক্ষণ পর্যন্ত আমি সন্তুষ্ট হব না।’

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা, আর্টিকেল ৫০ অনুযায়ী পার্লামেন্ট সদস্যদের অনুমোদন ছাড়াই তিনি বেক্সিট কার্যকরের আলোচনা শুরু করতে পারবেন। তবে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বিষয়টি উপস্থাপনের কথা বলা হয়।

ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, নতুন বিলটি নিয়ে আগামী মঙ্গল ও বুধবার বিতর্কে লিপ্ত হবেন দেশটির এমপিরা। তৃতীয় দিনের বিতর্কের পর ৮ ফেব্রুয়ারি বিলটির ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচনার জন্য হাউস অব লর্ডসেও পাঠানো হবে বিলটি। থেরেসা মে’র নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রত্যাশা, এটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী মার্চ নাগাদ এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিস ডেভিস বলেছেন, ‘ব্রিটিশ জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জনগণের এই রায় বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। ফলে আজ আমরা পার্লামেন্টে একটি বিল এনেছি। এতে আমাদের মার্চের শেষ নাগাদ আর্টিকেল ৫০ অনুযায়ী কাজ করার সুযোগের কথা থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, পার্লামেন্ট ব্রিটিশ জনগণের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুত এ আইন পাস করবে।’

ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী আশাবাদের কথা বললেও পার্লামেন্টে ভিন্নমতের কারণে বাস্তবে এই বিলটি পাস করা খুব মসৃণ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *