দীর্ঘ অভিযান, দেশজুড়ে উৎকণ্ঠা
দিনবদল ডেক্স: সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি আস্তানায় অন্তত দুই জঙ্গি মারা পড়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। তবে ভেতরে আরও জঙ্গি থাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিববাড়ির পাঠানপাড়ার আতিয়া মহল ঘিরে অভিযানের তৃতীয় দিন গতকাল রবিবার বিকালে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। তিনি বলেন, অভিযানে ‘ভালো’ ঝুঁকি রয়েছে। ভেতরে অবস্থানরত জঙ্গিরা বেশ কৌশলী। ফলে বলা যাচ্ছে না, কখন অভিযান শেষ হবে। গতকাল জঙ্গিদের অজ্ঞান করতে চেতনানাশক ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ১৪৪ ধারা জারি করে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার ভোর থেকে এই অভিযান শুরু হয়।
শনিবার এই অভিযান চলার সময় বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা। নিহতরা হলেন-জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ও আদালত পুলিশের পরিদর্শক চৌধুরী মো. আবু কয়সার, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জান্নাতুল ফাহিম, কলেজছাত্র অহিদুল ইসলাম অপু, নগরীর দাঁড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৩৮) ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার কাদিম শাহ (৩৫)। সকালে কাদিমের স্বজনরা হাসপাতালে এসে লাশ শনাক্ত করেন। এক আত্মীয় জানান, শহীদ আর কাদিম বন্ধু। শহীদের ডেকোরেটর ব্যবসা আছে। সেখানে কাদিমও সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। এক অনুষ্ঠানের কাজ পেয়ে তারা দুজন শনিবার শিববাড়িতে গিয়েছিলেন।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গতকাল বিকাল ৫ টায় এক ব্রিফিং-এ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল হাসান বলেন, ‘ভিতরে একের অধিক জঙ্গি রয়েছে। তাই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘তারা বাড়িটিতে বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লাগিয়ে রেখেছে। ফলে কমান্ডোদের বেশ সতর্কতার সাথে কাজ করতে হচ্ছে।’ ব্রিগেডিয়ার ফখরুল বলেন, ‘আমরা রকেট লাঞ্চার দিয়ে দেয়ালে ছিদ্র করে তারপর সেখান দিয়ে ভেতরে টিয়ারশেল ছুড়েছি।’ তারা টিয়ার সেল নিষ্ক্রিয় করার পদ্ধতি জানে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরপরও তাদের পক্ষে ভেতরে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।’ এখন পর্যন্ত দু’জন পুরুষ সদস্য নিহত হয়েছে। এখনও একাধিক জঙ্গি ভেতরে আছে। অভিযান সার্বক্ষণিক চলবে, যতক্ষণ না সমাধান হবে। তিনি আরো বলেন, ‘পুরো এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।’
দিনভর বিস্ফোরণ-গুলি: গতকাল দিনভর বিস্ফোরণ, গুলি, গ্রেনেডের শব্দে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি তথা গোটা সিলেট প্রকম্পিত হয়। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো একনাগাড়ে গোলাগুলি চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেট তথা দেশ জুড়ে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাস্থলে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেওয়া হয়। মাইকে করে এলাকাবাসীকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়। মসজিদের মাইকে করে জানানো হয়েছে যে অপরিচিত লোক বা কারো চলাফেরায় সন্দেহ হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে হুমায়ূন রশীদ চত্বর থেকে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিবাবাড়ি, পাঠানপাড়া, গুটাটিকর, মেমিনখলাসহ বেশ কয়েকটি মহল্লার মানুষ এখন কার্যত বন্দী। তারা গ্যাস, পানি, বিদ্যুত্ না পেয়ে কষ্টে পড়েছেন। জঙ্গি অভিযানের অংশ হিসাবে সেখানে এসবের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গত শুক্রবার থেকে। একই কারণে বেশ কয়েকটি মিষ্টান্ন ও বেকারি সমাগ্রী প্রস্তুতকারী কারখানা বন্ধ থাকায় কয়েকশত শ্রমিক বেকার রয়েছে তিন দিন থেকে। শহরে প্রবেশ পথসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে।
এদিকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ইউনিট, সোয়াত, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, পুলিশ-র্যাব জঙ্গিদের জীবিত ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্ত জঙ্গিরা আত্মসমর্পন করছে না। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধারণা আতিয়া মহলের নিচতলার ফ্লাটে ভারী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক রয়েছে। বাড়িতে বিধ্বংসী ব্যবস্থা নিয়ে জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত আতিয়া মহল ও তার আশেপাশের এলাকায় চারটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ বিস্ফোরণটি খুবই শক্তিশালী ছিল । বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। বেলা ১২ টার দিকে একটি বিস্ফোরণে আতিয়া মহলের পলেস্তেরা খসে পড়ে বলে স্থানীয়রা জানান। ভোরের দিকেও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা জানান, উদ্ধার করা ৭৮ জনকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে।
স্বজনদের কণ্ঠে ক্ষোভ : সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মধ্যে জোড়া বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি গাফিলতির অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নিহত এক পুলিশ কর্মকর্তার বোন প্রশ্ন রেখেছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই যদি এভাবে মারা যান, তাহলে দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া হবে কিভাবে। গতকাল সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে। পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে তাদের অনেকেই দিশেহারা। হাসপাতালের মর্গে কথা হয় পরিদর্শক মনিরুল ইসলামের ভাই সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। আবেগতাড়িত সাইফুল অভিযোগ করেন, ‘ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এত সদস্য থাকার পরও জঙ্গিরা হামলা চালাতে পেরেছে গাফিলতির কারণে। এখানে র্যাব ছিল, সেনাবাহিনী ছিল। ওরা আজ তিন দিন ধরে কি করছে?’
মনিরুলের বোন দিল আফরোজ রোজি বলেন, তার ভাইয়ের একটি মেয়ে আছে। তেমন কোনো সঞ্চয় তিনি রেখে যাননি। ফলে ভবিষ্যত্ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে তার পরিবার। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, আমাদের নিরাপত্তা নাই। প্রশাসন আমার ভাইয়ের নিরাপত্তা দিতে পারে নাই। পুলিশ কি করে নিরাপত্তা দেবে?
আতিয়া মহলে আটকে থাকা ৩০ ঘণ্টা : সিলেটের আতিয়া মহলে প্রায় ৩০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার পাওয়া বিশ্বজিত কুমার দে বিবিসি বাংলার কাছে বর্ণনা করেছেন তার অভিজ্ঞতা। তিনি বলছেন, আতিয়া মহলের দুই তলার একটা ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি থাকতেন। শুক্রবার ভোরের দিকে প্রচণ্ড শব্দে তাদের ঘুম ভাঙে। এরপর একবার বাইরে বের হয়ে এলে চারদিকে ধোয়া দেখে ভয়ে আবার ঘরে ফিরে যান। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিলেন না তারা।
বিশ্বজিত্ বলেন, ‘এই সময় হ্যান্ড মাইকে তিনি পুলিশের কথা শুনতে পান। আমাদের নীচতলায় থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পন করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন, এরপর আমরা বাসার দরজা-জানলা বন্ধ করে প্রায় ৩০ ঘন্টা বসে ছিলাম। ভয়ে আতঙ্কে কেটেছে প্রতিটি ঘন্টা। এরপর শনিবার সকালে শুনলাম আর্মি আসছে।’ কিভাবে বের হলেন এতগুলো মানুষ? জবাবে বিশ্বজিত্ বলেন, ‘মই তৈরি করে আতিয়া ভবনের পাশে থাকা আরেকটি ভবনের সাথে যুক্ত করা হয়। তারপর এই মই দিয়ে এক এক করে সবাইকে পাশের ভবনে সরিয়ে ফেলা হয়।’
নিরাপত্তা জোরদার :আাাতিয়া মহলের পার্শ্ববর্তী এলাকায় শনিবার রাতে দুই দফা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ঐ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আগের চেয়ে আরও বেশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। একই কারণে সাংবাদিকসহ অন্যদের অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রেনেডের সিপ্লন্টার সংগ্রহ করা হচ্ছে। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, গত শনিবার সন্ধ্যায় সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের দুটি স্থানে পৃথক বোমা হামলা হয়। এই ঘটনার পর থেকে সড়কটিতে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া শনিবার রাতের দুই দফা বোমা বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে বলেন, এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এ বিস্ফোরণে কারা জড়িত থাকতে পারে সে সমপর্কে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮ : গতকাল কমান্ডোদের গুলিতে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। এর আগে শনিবার রাতের বোমা বিস্ফোরণে প্রথম দফায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ চার জন ও পরে রাত দু’টায় ওসমানী হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় নগরীর জালালাবাদ থানার পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ও কাদিম শাহ মারা যান। এ নিয়ে রবিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮ জনে। দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে র্যাব, পুলিশের কর্মকর্তাসহ প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদকে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। গতকাল তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক জনি লাল দে’র অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃদ্ধা উদ্ধার : গতকাল সকালে জোত্স্না রানী দাস (৭০) নামের আরো এক বৃদ্ধাকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আতিয়া মহলের পাশের ভবনের ৫ তলা থেকে উদ্ধার করেছে। তিনি বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। হাসপাতালের বেডে জোত্স্নার এক আত্মীয় সুরঞ্জিত ঘোষ ইত্তেফাককে জানান, জোত্স্না, তার ছেলে ও ছেলের বউ এক সাথে ওই ভবনে বসবাস করেন। তিনি প্যারালাইসিস রোগী। শনিবার সকালে যখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা ফ্ল্যাট থেকে সবাইকে সরিয়ে নেয় তখন তারা মনে করেন একটু পর আবার ফিরে আসবেন। তাই রোগীকে টানা-হ্যাঁচড়া করতে যাননি। কিন্তু পরে সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেলে জোত্স্না আটকা পড়েন। পড়ে অনেক কষ্টে সেনাবাহিনীর সহায়তায় একদিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়। তিনি সেনা সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
অভিযান কখন শেষ হবে? : সিলেটে জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলের’ কাছে রবিবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিট ও এর ১০মিনিটের মাথায় দু’টি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এছাড়া থেমে থেমে গুলির শব্দও শোনা গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে আতিয়া মহলে ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসর্পণের জন্য বার বার আহ্বান করা হচ্ছে। সর্বশেষ ৩টা ১০ মিনিটে আতিয়া মহলের ভেতরে গ্যাস ছোড়া হয়েছে। তবে দীর্ঘ ৬৪ ঘণ্টার অভিযান শেষেও এখন পর্যন্ত জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করেনি। কবে নাগাদ অভিযান শেষ হবে তা-ও বলতে পারছেন না কেউ। এদিকে আতিয়া মহলের অদূরে এলাকাবাসী ও উত্সুক জনতার ভিড় রয়েছে। পুলিশ সড়কে চৌকি বসিয়ে গণমাধ্যমকর্মী ও জনতাকে নিরাপদ দূরত্বে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্পরতা জোরদার করা হয়েছে।
কী হচ্ছে আতিয়া মহলে? : সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ কী হচ্ছে তা বাইরে থেকে জানার কোনও উপায় নেই। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারছেন না। ফলে সেখানকার খবরও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আতিয়া মহলে মূলত কী ঘটছে তা জানা যায়নি। যতদূর জানা গেছে, সেখানে কিছুক্ষণ পরপরপ বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। শিববাড়ির পাশেই জৈনপুর এলাকার বাসিন্দা জুমন খান জানান, বেলা সাড়ে ১১টা ও সোয়া ১২টার দিকে দুটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া থেমে থেমে গুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লোকজনকে রাস্তায় না বের হওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা দিচ্ছেন। সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ‘আতিয়া মহল’ নামে পাঁচতলা ওই বাড়িটির নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ির ভেতর থেকে বাইরের দিকে গ্রেনেড ছোড়া হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এরপর ‘আতিয়া মহল’ ঘিরে রাখে পুলিশ। জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনার জন্য শুক্রবার বিকেলে সোয়াত টিম ও রাত সাড়ে ৭টার দিকে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শনিবার ভোরে আতিয়া মহলে অভিযান শুরু করে সোয়াত ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো বাহিনী। সেই অভিযান রবিবার রাত ১০ টা পর্যন্ত শেষ হয়নি