ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি’র কমিটি চূড়ান্ত : সালাউদ্দিনকে নিয়ে ক্ষোভ

0

dinbodal

দিনবদল ডেক্স: ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই ভাগে ভাগ করে ‘সুপার সেভেন’কমিটি ঘোষণা করা হবে। দূ’টি তালিকাও ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। যেকোনো সময় এ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, তালিকায় ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুম, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল আলীম নকী, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক মুন্সী বজলুল বসিত আঞ্জু ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এ জি এম সামসুল হক, শাহিনুর আলম মারফত ও সাহেল রহমানের নাম রাখা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণের তালিকায় সভাপতি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান, সাধারণ সম্পাদক নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম সম্পাদক মকবুল হোসেন টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ইউনুস মৃধা, সাব্বির হোসেন আরিফ ও আ ন ম সাইফুল ইসলামের নাম রয়েছে।

তবে দক্ষিণের তালিকায় শেষ মুহূর্তে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে এমন আভাস পাওয়া গেছে। তবে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দেশব্যাপী সর্বস্তরে দল গোছানোর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের কাজ এগিয়ে চলেছে। শিগগিরই ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। তবে এবার যোগ্য ও অভিজ্ঞদের দিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি করা হবে।’

এদিকে দক্ষিণের কমিটিতে দৌড় সালাউদ্দিনের নাম আলোচনায় আসায় নেতাকর্মিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীরা জানান, দলের দূর্দিনে তাকে আমরা পাশে পাইনা।

ঢাকা-৪ আসনের সাবেক এমপি সালাউদ্দিন ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নেতাকর্মীদের ফেলে চলে বিদেশে চলে যান সালাউদ্দিন। দীর্য আড়াই বছর পর দেশে আসে, তখন তিনি মহানগরের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। এখন মহানগর কমিটির ঘোষণার গুঞ্জন শুনতেই সালাউদ্দিন সর্বোচ্চ চেষ্টা-তদবির শুরু করেছেন।

এ বিষয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগরের একাধিক নেতা বলেন, টাকার বিনিময় যদি এই নেতাকে মহানগরের দায়িত্বে আনা হয় তাহলে প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড, বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরসহ অনেকেই পদত্যাগ করবেন। ওই নেতারা জানান, অযোগ্য ও ব্যর্থ নেতাকে কমিটিতে আনলে দল অনেক সমস্যায় পড়বে।

ইতোপূর্বে মহানগর বিএনপির মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়ে দৌড় সালাউদ্দিন ২০১৬ সালে ১৭ আগস্ট মতিঝিল দিলকুশায় একটি বৈঠক করে সর্বস্তরের নেতাদের চিঠি বিলি না করে নিজেদের অনুসারীদের এনে পকেট কমিটি করতে চেয়েছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা অফিস ভাংচুর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে দৌড় সালাউদ্দিন বাথরুমে লুকিয়ে থাকেন।

এছাড়া রাজধানীর কমদমতলীর ধনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কর্মীসভায় সালাহউদ্দিন আহমেদ এর সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায় এবং গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতা ও ধনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুম্মন মিয়া।

শুধু তাই নয় ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী ও শ্যামপুর এলাকার নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাউকে জুতাপেটা করেছে, কাউকে চড়-থাপ্পর মেরেছে বলেও অভিযোগ আছে। তার এই অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়নি দনিয়া ইউনিয়ণের চেয়ারম্যান জুম্মনও। মাতুয়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান, সারুলিয়া ইউনিয়নের নেতা হাজী হযরত আলী, শ্যামপুর থানা বিএনপির আহবায়ক হাজী মিরু হোসেন মীরুকে বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত করেছেন দৌড় সালাউদ্দিন। এমনকি তার হাত থেকে রেহাই পায়নি মাতুয়াইল ইউনিয়নের নেতা সানাউল্লা ও তার স্ত্রী। তাদেরও গালিগালাজ করেন তিনি। হাই কমান্ডের নির্দেশ অমান্য করায় বিএনপি থেকে ২০১০ সালে তিনি বহিস্কার হন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *