ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণা
![](https://dinbodalnews24.com/wp-content/uploads/2017/04/61117_b3.jpg)
![](https://dinbodalnews24.com/wp-content/uploads/2017/04/61117_b3.jpg)
এস কে দেব: ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে দুই বছরের চুক্তিতে ইরাক যান ২০০ বাংলাদেশি। কিন্তু ছয় মাসের মধ্যেই বিধি বাম। বলা হয়, তোমাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ। এখন তোমাদের দেশে ফিরে যেতে হবে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসেন তারা।
এভাবেই মেসার্স সততা ও আকাশ ভুবন ট্রাভেল এজেন্টের বিরুদ্ধে নিজেদের অভিযোগের কথা জানান বগুড়ার দুপচাচিয়ার বাসিন্দা আজিজার রহমান (পাসপোর্ট নং- এসি৮৩৬৮৫৮৪)।
তিনি কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, জমিজমা বিক্রি ও বন্ধক রেখে সাড়ে চার লাখ টাকা জোগাড় করি। এরপর সততা এজেন্সির মাধ্যমে ইরাকে পাড়ি জমাই। চুক্তিতে ছিল দুই বছর থাকতে পারবো। এর মধ্যে প্রতি মাসে বেতন তিনশ’ ডলার। পাশাপাশি দুই ঘণ্টা ওভারটাইম করতে পারবো। নির্ধারিত মেয়াদ শেষে যত দিন খুশি থাকতে পারবো।
কিন্তু ইরাকে পৌঁছানোর ছয় মাসের মাথায় ওই কথার কোনো প্রমাণ পাইনি। ইরাক ফেরত বাংলাদেশি কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আল জুমাইরা নামের একটি তেল কোম্পানিতে দুই বছরের কন্ট্রাক্টে তাদের ইরাক পাঠায় মেসার্স সততা। কিন্তু ছয় মাস পরই তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
এর মধ্যে ২০ দিন আগে ১২৬ জন এবং গেল সপ্তাহে ৭৪ জন ইরাক থেকে ফেরত এসেছে। ইরাক ফেরত মোহাম্মদ সেরাজুল ইসলাম বলেন, ইরাকের কারবালার একটি তেল কোম্পানিতে ক্লিনার হিসেবে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী আমাদের থাকা ও খাওয়া কোম্পানি বহন করবে এমনটাই বলা হয়েছিল। ছয় মাস ওই শর্ত পালন করে আমাদের বিমানে উঠিয়ে দেয়া হয়।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, ইরাক ফেরত প্রবাসী কর্মীদের গ্রহণের জন্য বিমানবন্দরে বিএমইটি’র শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসব কর্মীদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যেতে পরিবহন খরচ হিসেবে বিএমইটির পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেরত আসা বেশিরভাগ কর্মী বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার কালমেঘা গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে বাবুল মিয়া বসতভিটা বন্ধক রেখে এবং সুদে ঋণ নিয়ে তিন লাখ ৮০ হাজার টাকায় ইরাকে যান।
২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে টেকনোফকি নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আবদুল মান্নানকে ইরাকের বসরায় আল বিলাত নামের কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে পাঠানোর পর ঠিকমতো বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছিল না। সেখানে তিন বেলা খাবারও তাদের ঠিকমতো দেয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ইরাকে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তারা দেশে ফেরত এসেছেন। এদিকে ইরাকে বাংলাদেশি কর্মী আটকে রেখে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
বিএমইটি সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি সম্পর্কে তারা নজরদারি করছে। যেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।