চীনে ৯২ বছর বয়সী মাকে শুকরের খাঁচায় রাখতো ছেলে
চীনে শুকরের খোঁয়াড়ের ভেতরে ৯২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে বন্দী করে রেখেছিল নিজের ছেলে ও তার বউ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ছবি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংজি প্রদেশে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
চীনের সাউদার্ন মর্নিং পোস্ট পত্রিকা জানিয়েছে, ক্ষীণকায় ওই বৃদ্ধাকে বছরের পর বছর ধরে এভাবেই রাখা হয়েছে। ইয়াং নামে ওই নারীকে ১০ বর্গমিটার ওই খোঁয়াড়ের ভেতর বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছিল। আর তাকে ঘুমানোর জন্য দেয়া হয়েছিল কাঠের বেঞ্চি।
সম্প্রতি চীনে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি অবহেলার বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ইয়াং নামের এই বৃদ্ধার ঘটনাটিও হয়তো অজানাই থেকে যেত, যদি না প্রিটি নান গুলান নামে স্থানীয় এক নারী একটি ভিডিও পোস্ট করতেন। মিয়াওপাই নামে জনপ্রিয় ভিডিও সার্ভিসে খাঁচার ভেতর বসে থাকা ইয়াংয়ের ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। গত ৬ জানুয়ারি এটি আপলোডের পর থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আঠারো লাখের বেশি দেখা হয়েছে।
চীনা মাইক্রো ব্লগিং সাইট ওয়েইবোতে এক লাখেরও বেশি অনলাইন ব্যবহারকারী ‘৯২ বছরের বৃদ্ধা শুকরের খাঁচায়’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন। এরা সবাই ইয়াংয়ের ছেলে ও তার স্ত্রীকে ‘পশু’ বলে অভিহিত করেছেন।
গত ১০ জানুয়ারি মর্নিং পোস্ট পত্রিকায় ইয়াংয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় তার হাড্ডি-সর্বস্ব শরীরের ছবি ছাপা হলে আরো অনেকেই ক্ষুব্ধ হন ছেলে ও ছেলে-বউয়ের ওপর। পত্রিকাটি জানিয়েছে, হাসপাতালে ইয়াংকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং স্থানীয়রা তাকে কাপড় ও বিছানা দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, চীনের সমাজে বৃদ্ধ পিতা-মাতার ওপর এ ধরণের নিপীড়নের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। ২০১৪ সালে হেনান প্রদেশে ৯০ বছর-বয়সী এক বৃদ্ধ এমন অবস্থার শিকার হয়েই প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত বছরের নভেম্বর মাসেই ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে রাস্তায় আবর্জনার ভেতর থেকে খাবার উঠিয়ে খেতে দেখা যায় । মধ্যবয়সী কন্যা সন্তানের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছিলেন ওই বৃদ্ধ বাবা।