গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণেই থাকছে, বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

0

aa6390a7523682e70bc97dd12bd90549-58f3a2b112e69

দিনবদল ডেক্স:গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণেই থাকছে, তবে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে সরকারের দুই জন মন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য না সরিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে গত শনিবার একটি অনু্ষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি বিকল্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে অনুযায়ী নামাজের সময়ে গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ঢেকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি দু’জনই উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানস্থলেই ভাস্কর্যের বিষয়ে দু’জনের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জাতীয় ঈদগাহের খুব কাছে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য স্থাপন করায় ঈদের নামাজ আদায়কালে মুসল্লিরা বিব্রত হতে পারেন। এ কারণে নামাজের সময়ে বিশেষত দুই ঈদের নামাজের সময় ভাস্কর্যটি ঢেকে রাখার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী। তার এই প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতিও সায় দেন বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের দুই জন কেন্দ্রীয় নেতা নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সকালে প্রধান বিচারপতির আলোচনার পরই শনিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে ভাস্কর্য ইস্যুতে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহের সামনে স্থাপিত কোনও ভাস্কর্য যেন কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিমত হলো, সুপ্রিম কোর্টের সামনে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। এ ঈদগাহ ময়দানের মর্যাদা রক্ষা কতে হবে।’

আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য রাখা বা না রাখার সম্পূর্ণ এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের। এ কারণে যেন কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না লাগে, নামাজের সময় তা যেন দেখা না যায়, কেবল সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে এ ভাস্কর্যের পাশেই জাতীয় ঈদগাহ মাঠ। সেখানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য পাশে রেখে ঈদের নামাজ আদায়ের ইস্যুটিকে সামনে এনে হেফাজতের নেতারা ‘মূর্তি’ সরানোর দাবি জানান। ‘মূর্তি’ সরানো না হলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেরও ঘোষণা করেন।

গত ১১ ডিসেম্বর হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হেফাজতসহ অন্য ধর্মীয় নেতারা সেই বৈঠকে ‘মূর্তি’ সরানোর দাবি তুললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাস্কর্য আমারও পছন্দ নয়।’ এরপর হেফাজতে ইসলামের ‘মূর্তি’ সরানোর দাবি আরও জোরালো হতে শুরু করে।

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, সুপ্রিম কোট চত্বরে নির্মিত গ্রিক দেবীর ‘মূর্তি’ সরছে না। তবে বিকল্প সিদ্ধান্ত নিয়ে হেফাজতে ইসলামের দাবি আংশিক মেনে নেওয়া হচ্ছে। জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজের সময়ে বা ধর্মীয় কোনও আয়োজনের সময়ে ভাস্কর্য ঢেকে রাখা হবে। তবে ‘মূর্তি’ সরবে কি সরবে না, এর এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের। তাই এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে মনে করে সরকার।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *