খালেদার সংবাদ সম্মেলন বিকেলে

0

khaleda-press-realease20170510105035

দিনবদল ডেক্স: ভিশন ২০৩০ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।

চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ২৫০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, কূটনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এর আগে গত সোমবার ভিশন ২০৩০ নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে ভিশন ২০৩০ অনুমোদন করা হয়।

ভিশন ২০৩০ কী?

বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের জন্য বিস্তারিত প্রস্তাবই ভিশন ২০৩০। এই সময়ের মধ্যে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ‘ডাবল ডিজিটে’ উন্নীত করার ‘সৃজনশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত’ উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। এছাড়া ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চায় দলটি।

এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদকে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট ও প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার পক্ষে তারা। বিষয়গুলোর একটি প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছে বিএনপির গত ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলীয় কাউন্সিলেই।

এ প্রসঙ্গে এরআগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ভিশন ২০৩০-এ কী কী থাকবে, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কী কী কাজ করবে, দেশকে কীভাবে উন্নত করবে, সেগুলোই শুধু খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে জানাবেন। তবে এই প্রস্তাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ও সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়া হবে না বলে তিনি জানান।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব করে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেন একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারে, সে লক্ষ্যেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রয়োজন। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ভবিষ্যতে যথাসময়ে জাতির সামনে উপস্থাপন করব।’

দলের বিগত কাউন্সিলে দেয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিএনপির ভিশন ২০৩০ এর মূল দিক দু’টি। একটি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা, যার মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারে। এজন্য বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ডাবল ডিজিটে উন্নীত করার সৃজনশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত উদ্যোগ নেয়া হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। এক্ষেত্রে সংসদ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট করা ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা।

এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেশবাসী গভীরভাবে উপলব্ধি করছে যে, প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা সংসদীয় সরকারের ছদ্মাবরণে একটি স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্ম দিয়েছে। এই অবস্থার অবসানকল্পে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রের এককেন্দ্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রেখে বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সম্প্রদায়, প্রান্তিক গোষ্ঠী ও পেশার জ্ঞানীগুণী ও মেধাবীদের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমাদের জাতীয় সংসদকে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এদিকে, বর্তমান সরকারের আমলে করা বিভিন্ন আইনের বিষয়েও ভিশন ২০৩০-এ পরিবর্তনের কথা থাকবে। বিভিন্ন বিতর্কিত আইন বাতিল, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আটক অবস্থায় দৈহিক-মানসিক নির্যাতন বন্ধের প্রস্তাব থাকবে বিএনপির ভিশনে।

এতে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা ও পদ্ধতি সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন এবং নিয়োগের জন্য বাছাই বা সুপারিশকৃতদের ব্যক্তিগত তথ্য ও সম্পদবিবরণী জনগণের জন্য উন্মুক্ত করার কথা বলা হবে।

ভবিষ্যতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে কঠোরতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা এবং সন্ত্রাস দমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় থাকবে ভিশন ২০৩০-এ।

বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সমর্থন আদায়ে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের মধ্যে কোনোরকম সন্ত্রাসবাদী তৎপরতাকে বরদাস্ত না করার অঙ্গীকার করা হবে ভিশনে।

এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মাদক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে।

এ প্রসঙ্গে গত বছরই খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘এই ভিশনের আলোকেই আগামীতে আমাদের দলের নির্বাচনী ইশতেহার রচিত হবে।’

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *