উখিয়ায় যুবলীগ নেতার সহায়তায় নতুন বস্তি

0

দিনবদল ডেক্স: কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় মিয়ানমার থেকে নীরবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অনুপ্রবেশ বেড়ে গেছে। উখিয়ার পশ্চিম বালুখালী সরকারি বনভূমিতে আরেকটি নতুন বস্তি গড়ে তোলা হয়েছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও যুবলীগ নেতা নুরুল আবছার চৌধুরীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ বস্তিটি গড়ে উঠেছে।

জানতে চাইলে এই ইউপি সদস্য বলেন, ‘কুতুপালং বস্তি এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কারণে রোহিঙ্গারা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে বালুখালী এলাকায় তাদের আপাতত থাকার জন্য সহায়তা করা হয়েছে। ’

উখিয়ার কুতুপালং বস্তি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দক্ষিণে এবং সীমান্তের নাফ নদের জিরো পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে বালুখালী সংরক্ষিত বনভূমি। এ বনভূমিতে গত দুই দিনে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। তারা নতুন করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে উখিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছে। এসব লোকের জন্যই সেখানে নতুন বস্তি তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৪০০ বেশি ঝুপড়ি ঘর তৈরি হয়েছে।

তবে নতুন বস্তিতে আশ্রয় নেওয়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা দাবি করে, কুতুপালং শিবির থেকে তাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। অনন্যোপায় হয়ে স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরীর সহযোগিতায় তারা পশ্চিম বালুখালীতে আশ্রয় নিয়েছে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আলী কবির বলেন, ‘প্রতিদিন সরকারি বনভূমি দখল করে বস্তি নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। উখিয়ায় পশ্চিম বালুখালীতে সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত বনভূমির পাহাড় কেটে কয়েক শ ঝুপড়ি ঘর তোলা হয়েছে। ’

রোহিঙ্গারা জানায়, বালুখালীর নতুন বস্তিকে সাতটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। ৫০টি পরিবার নিয়ে একটি ব্লক করে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন মাঝিকে (সর্দার)। এভাবে সাতটি ব্লকে সাতজন মাঝিকে নতুন বস্তি পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন যুবলীগ নেতা নুরুল আবছার চৌধুরী।

এলাকার লোকজনের অভিযোগ, নুরুল আবছার চৌধুরীর নেতৃত্বেই সরাসরি নতুন রোহিঙ্গা শিবির গড়ে তোলা হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন থেকেও রোহিঙ্গাদের আনা হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, ‘অজ্ঞাত উৎস’ থেকে পাওয়া অর্থে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে দলে দলে রোহিঙ্গাদের এ পাড়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। নতুন করে বস্তি তৈরির কারণে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বেড়ে গেছে বলেও জানা গেছে।

নতুন করে গড়ে ওঠা বস্তিতে গত দুই দিন ধরে দামি গাড়ি নিয়ে অপরিচিত লোকজনেরও আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।

জানতে চাইলে উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সিদ্দিক বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠন আরএসও (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) নেতা ডা. জয়নাল নতুন করে একটি রোহিঙ্গা শিবির স্থাপনের অর্থ যোগান দিচ্ছেন।
এ এলাকায় আরো ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা এনে নতুন ফন্দি আঁটাই তার উদ্দেশ্য। ’ পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গত কদিনের মধ্যেই আমার ইউনিয়নে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এ কাজে আমার সায় নেই। আমি গত কদিন ধরে চট্টগ্রামে অবস্থান করার সুযোগে আমার পরিষদের মেম্বার আবছার উদ্দিন চৌধুরী নেহায়েত বিদেশি টাকার লোভে পড়ে এমন জঘন্য কাজটি করেছেন। ’

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের এলাকা ছাড়া করতে খুব বেশি দিন দেরি নেই। তারা শক্তি সঞ্চয় করছে মাত্র। এসব জেনেও কেন আমাদের রাজনীতিবিদ এবং জনপ্রতিনিধিরা এসব কাজ করছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ’

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *