আর্টিকেল ৫০’র পক্ষে যাওয়া আমার ক্ষেত্রে অনৈতিক : টিউলিপ
অনলাইন ডেক্স: ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য ব্রিটিশ সংবিধানের ‘আর্টিকেল ৫০’র পক্ষে ভোট দেয়া নিজের জন্যই অনৈতিক অবস্থান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ এমপি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনী টিউলিপ সিদ্দিক। গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কি কারণে ছায়ামন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে ‘আর্টিকেল ৫০’ এর পক্ষে ভোট দেবেন না তিনি।
মাত্র ২ বছর আগে প্রথমবারের মত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন টিউলিপ সিদ্দিক। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে দেশটির রাজনীতি ও অর্থনীতিতে যে ভয়াবহ ঝড় বয়ে গেছে তা ছুঁয়ে গেছে তাকেও। টিউলিপ গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলাম না। আর সে কারণেই আমার মনে হয়েছে, এই ছায়া মন্ত্রীসভায় আমার থাকা উচিত নয়। কেননা, ছায়ামন্ত্রী সভাও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি একই কারণে ‘আর্টিকেল ৫০’ এর পক্ষে ভোট দেব না।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার আক্রমণের শিকার হচ্ছেন টিউলিপ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ভয়ঙ্কর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে প্রচুর বাজে মন্তব্য সহ্য করতে হয়। আমাকে ভুল বুঝবেন না, কিন্তু আমি মেঝো সন্তান এবং এ সবকিছু সহ্য করার মত শক্তি আমার মধ্যে আছে। কিন্তু তাদের আক্রমণের মূল বিষয় হল- আমি ব্রিটিশ নই।
টিউলিপ বলেন, আমি এখানে জন্মেছি। এখানের স্কুলেই আমি পড়েছি। আমার বাবা-মা দুইজনই ব্রিটিশ নাগরিক। তারাও বিয়েও করেছে ব্রিটেনে। ক্রিস নামের একজনকে আমি বিয়ে করেছি। আমার মেয়ের নাম অজেলিয়া পার্সি। আমি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কাজ করি। কিন্তু শুধুমাত্র আমার নামের জন্য এবং আমার জাতিগত অতীতের পরিচয়ের কারণে আমি ব্রিটিশ নই!
আমি আর্টিকেল ৫০’র বিপক্ষে ভোট দেবার কথা জানানোর কিছু সময় পরই একজন আমার অফিসে এসেছিল। সে বলেছিল, টিউলিপের আরো অনেক বেশি বিবেচনার মাধ্যমে কথা বলা উচিত। কারণ তোমরা জান জো কক্সের (ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করায় তাকে হত্যা করা হয়) কি অবস্থা হয়েছিল। সেও কিন্তু (ইইউ) ছেড়ে আসার পক্ষে ছিল না।
এ সময় টিউলিপের সঙ্গে ট্রাম্পের তুলনা করে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদক বলেন, ট্রাম্পও তার সমর্থকদের দোহাই দিয়ে যেই কাজগুলো করছে, আপনিও একই ভাবে নিজের সমর্থকদের দোহাই দিয়ে আর্টিকেল ৫০’র বিরোধিতা করছেন। এটা কি একই রকম নয়।
তার এমন প্রশ্নের উত্তরে টিউলিপ হেসে বলেন, প্রথমবারের মত আমাকে কেউ ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা করল। তবে হ্যাঁ, আমি শিকার করছি ট্রাম্পের মত সমর্থকদের ইচ্ছা অনুসারে যদি কেউ দেশের গণ মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করে তাহলে সেটা যেমন অনৈতিক, তেমনি এই দেশেও শুধু সমর্থকদের জন্য যদি কোন এমপি আর্টিকেল ৫০ এর বিরোধিতা করে, সেটাও অনৈতিক হবে।
তিনি বলেন, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এটি হবে বড় পরিসরে ধোঁকা দেয়া। আমার জন্য এবং আমার প্রতিবেশী এমপি কেরি স্টারমারের জন্য এটি বেশ বিতর্কিত একটি বিষয়। কেননা এটি আমাদের নিজেদের অঞ্চলের মানুষকে ধোঁকা দেয়া হবে। একই কারণে আমরা ‘এইচএস২’ বিলের বিপক্ষে ছিলাম। বিষয়টি আগেও বহুবার নিশ্চিত করেছি, আমি আগে এমপি আমার এলাকার মানুষের জন্য এবং আমার এলাকার নাগরিকদের ইচ্ছাই আমার মাধ্যমে প্রকাশিত হবে। দ্য গার্ডিয়ান।