আজ বেলা ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
![](https://dinbodalnews24.com/wp-content/uploads/2017/02/1485887301.jpg)
![](https://dinbodalnews24.com/wp-content/uploads/2017/02/1485887301.jpg)
দিনবদল ডেক্স: আজ শুরু হচ্ছে প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকাল তিনটায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত বইমেলার উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে ‘সম্প্রীতির জন্য সাহিত্য’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের পদচারণায় জাতির অহঙ্কারের এ মেলা ঘিরে মাসব্যাপী মুখর থাকবে একাডেমি প্রাঙ্গণ। নতুন গ্রন্থ আর গ্রন্থপ্রেমীদের মুখর রাখতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে আনা হয়েছে বলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানিয়েছেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিদেশি অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চীনের প্রখ্যাত গবেষক ও রবীন্দ্র-অনুবাদক ডং ইউ চেন, অস্ট্রিয়ার মেনফ্রেড কোবো, পুয়ের্তোরিকোর লুস মারিয়া লোপেজ, ভারতের চিন্ময় গুহ প্রমুখ। প্রকাশক-প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন লেখক-প্রকাশক মফিদুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ। স্বাগত ভাষণ দেবেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি।
গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬ প্রদান করা হবে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত দুটি গ্রন্থ মীর মশাররফ হোসেনের অমর সৃষ্টি বিষাদ সিন্ধুর ফকরুল আলমকৃত অনুবাদ ‘ওশান অব সরো’, হারুন-অর-রশিদ রচিত মূলধারার রাজনীতি : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল ১৯৪৯-২০১৬’, জার্মানি থেকে প্রকাশিত হান্ড্রেড পোয়েমস ফ্রম বাংলাদেশ’ এবং ক্রিশ্চিয়ান কার্লসন অনূদিত সুইডিশ ভাষায় বাংলাদেশের কবিদের কবিতা সংকলন বেঙ্গল ইসকা মোঁ’ (বাংলার মেঘ) তুলে দেওয়া হবে।
প্রতিদিন মেলা শুরু হবে বিকাল তিনটায়। চলবে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার মেলা বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলবে। শুক্র ও শনিবার ‘শিশুপ্রহর’ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শিশুপ্রহর বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত।
গ্রন্থমেলা বসবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং একাডেমির সম্মুখস্থ ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় চার লাখ বর্গফুট জায়গায়। অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশকে ১২টি চত্বরে সজ্জিত করা হয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ৮০টি প্রতিষ্ঠানকে ১১৪টি এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৪৯টি ইউনিট; মোট ৪০৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৬৩টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ১৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
১০০টি লিট্ল্ ম্যাগাজিনকে বর্ধমান হাউসের দক্ষিণ পাশে ‘লিট্ল্ ম্যাগাজিন কর্নারে’ স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন তাদের বই বিক্রি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।
একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির ২টি প্যাভিলিয়ন, একাডেমির শিশু-কিশোর প্রকাশনাভিত্তিক বিক্রয়কেন্দ্র এবং একাডেমির সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকারের বিক্রয়কেন্দ্র থাকবে। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে ১০১টি নতুন বই। এবারও ‘শিশুকর্নার’ মেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর বই আজ
থেকেই মেলায়
অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রথমদিনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন বই ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ প্রকাশিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার নির্বাচিত প্রবন্ধ গ্রন্থটিতে তার বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাবেন পাঠক। বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। ভূমিকা লিখেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। প্রচ্ছদ করেছেন আনওয়ার ফারুক। দাম ৩৫০ টাকা।
নতুন সংযোজন
সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের নতুন বিন্যাসে এবারের অধিকাংশ স্টল পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আনা হয়েছে। টিএসসি ও দোয়েল চত্বরের মূল প্রবেশ পথে এলইডি মনিটর স্থাপিত থাকবে। এখান থেকে মেলা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য/নির্দেশনা পাওয়া যাবে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘নতুন বইয়ের প্রদর্শশালা’ করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন প্রকাশিত নতুন বই দিনভিত্তিক সাজানো থাকবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে হুইল চেয়ারের সংখ্যা গতবারের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশে পর্যটন কর্পোরেশনের ১টি ক্যান্টিন এবং বাংলা একাডেমি অংশে পর্যটন কর্পোরেশনের ১টিসহ ২টি ক্যান্টিন চালু থাকবে। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে স্টলগুলোতে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে পর্যাপ্ত মাটি ফেলে জমি ভরাট করা হয়েছে। প্রায় ৮০ হাজার বর্গফুট এলাকায় ইট ও বালু দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা/উন্মুক্ত প্রান্তর নির্মাণ করা হয়েছে। শিশুকর্নারে এবার নতুন সংযোজন ‘মাতৃদুগ্ধ সেবাকেন্দ্র’। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের ‘মুক্তমঞ্চে’ নাটক মঞ্চায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।