আজ বঙ্গবীর আতাউল গণি ওসমানীর মৃত্যু দিবস

0

20170216122147

দিনবদল ডেক্স: আজ ১৬ই ফেব্রুয়ারি। আমাদের জাতীয় জীবনে একটি শোকাবহ দিন। এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর আতাউল গণি ওসমানীর মৃত্যুদিবস। ১৯৮৫ সালের আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওসমানী ১৯১৮ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দয়ামীর গ্রামে। একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে অপরিসীম কর্মে সাধনায় হয়ে ওঠেছেন মহীরূহ। তাঁর সমর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটে এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিটি ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। সব চেয়ে বড় কথা, তিনি একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে জাতিকে উপহার দিয়েছেন হাজার বছরের প্রত্যাশিত নতুন ভূ-খন্ড স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ওসমানীর অবদানকে অস্বীকার করা মানে স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করা। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সামরিক নেতৃত্ব দেন। অসাধারণ বীরত্ব আর কৃতিত্ব প্রদর্শন করে তিনি পশ্চিমাদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করেন। এর পাশাপাশি তিনি ছিলেন আজীবন গণতন্ত্রী; সেই সঙ্গে ধার্মিকও। একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে তাঁর ছিলো অনন্য সাধারণ পরিচিতি। তাঁর নামটি বাদ দিলে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস রচনাই থেকে যাবে অসম্পূর্ণ। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হচ্ছে, বঙ্গবীর ওসমানীকে নানাভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে; দেশের জন্য তাঁর যে অবদান রয়েছে তা ধূলিস্যাৎ করার অপচেষ্টা অব্যাহত আছে।

মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী ১৯৩৯ সালে ভারতের মুসলিম আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সর্বকনিষ্ঠ মেজর হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। মাত্র ২৩ বছর বয়সে একটি ব্যাটালিয়নের প্রধান হয়ে তিনি গৌরবময় রেকর্ড অর্জন করেন। ওসমানী ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। তখন তিনি ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে তিনি পালন করেন অগ্রণী ভূমিকা। তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন ১৯৫৭ সালে। আর অবসর গ্রহণ করেন ১৯৬৭ সালে। ওসমানী পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন। সেই ধারাবাহিকতায় তাঁর ওপর অর্পিত হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব। যুদ্ধ পরিচালনায় তিনি একজন সফল ও কৃতিত্বপূর্ণ সমরনায়কের পরিচয় দেন। মোট কথা, তাঁর সমস্ত জীবনই ছিলো সততা, নিষ্ঠা, ত্যাগ ও তিতিক্ষায় পূর্ণ উজ্জ্বল এবং সংগ্রামমুখর। কায়েমী স্বার্থবাদীদের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান ছিলো সুস্পষ্ট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন ভোগ বিলাস ও স্বার্থচিন্তা থেকে অনেক দূরে। তাই অকৃতদার ওসমানী তাঁর জীবদ্দশায়ই জীবন্ত কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিলেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *