আজ পহেলা ফাল্গুন, প্রকৃতি সাজবে তার নতুর রূপে
বিশেষ প্রতিনিধি: বছর ঘুরে আবারও ফাগুনের দেখা। ছয় ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রং-তুলির আঁচরে শেষ হওয়া নয়। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতি প্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত নেই।
আজ পহেলা ফাল্গুন। প্রকৃতি সাজবে তার নতুর রূপে। গাছে গাছে ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক, বসন্ত তার নিজস্ব রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে। বাঙালির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে ভালোবাসার, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও বটে। দিন-ক্ষণ গুনে গুনে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি।
কালের পরিক্রমায় বসন্ত বরণ আজ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব। আবাল-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী বসন্ত উম্মাদনায় মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যায় রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতা।
বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তী রঙেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও। তরুণীরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সপে দিতে চাইবে। অপরদিকে বসন্তের উদাস হাওয়ায় তরুণেরা নিজেকে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির মন কাড়তে চাইবে। বসন্ত যেন মানব মন আর প্রকৃতির রূপ প্রকাশের লীলা-খেলা।
বসন্ত উৎসব বলি আর বরণই বলি, এটি মিশে আছে একেবারে আবহমান গ্রাম বাংলার মাটি-মানুষের সঙ্গে। শ্যামল বাংলার গাছ গাছালিতে পত্রপল্লবের নতুন কুড়ি যেন গ্রামীণ মানুষের অন্তরকে আরও শুভ্র করে, করে পবিত্রও।
তবে বসন্ত উৎসব আজ গ্রামীণ আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। শহুরে মানুষের কাছেও বসন্তের আবেদন ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে শহরের তরুণ-তরুণীরা বসন্ত বরণে দিরভর ব্যস্ত থাকে। ফুলে ফুলে ভরে যাবে তরুণীর চুলের খোপা। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বসবে খাবারের মেলা। এ দিন দর্শনীয় স্থানগুলো মানুষের পদচারণায় যেন তিল ধরার ঠাঁই থাকে না।
বসন্তের আগমনে নব উদ্যমে জেগে উঠুক বাঙালি, জেগে উঠুক বাঙালির প্রাণ।