অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম নিজের হাতেই রেখেছেন নিয়ন্ত্রন
দিনবদল ডেক্স: বিরাট কোহলির জন্য বিস্ময় হয়েই এলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮২ করে আবারও বাজে শটের মাশুল দিয়ে সাকিব আল হাসান ফিরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ইনিংসটা দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ারই শঙ্কা জেগেছিল। মিরাজ জ্বলে উঠলেন ঠিক তখনই। ১০৩ বলে দিনশেষে অপরাজিত ৫১ রানে। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটিতে ৬ উইকেটে ৩২২ রান তুলে দিনটা ভালোভাবেই কাটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ফলোঅন এড়াতে প্রয়োজন আরও ১৬৬ রান।
বাংলাদেশের জন্য শেষ সেশনটাই ছিল বেশি ভালো। ৩০ ওভার ব্যাট করে ৭৬ রান এসেছে এই সেশনে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম নিজের হাতেই রেখেছেন নিয়ন্ত্রন। উইকেটকিপিং নিয়ে সমালোচনার কড়া জবাব দিচ্ছেন ব্যাট হাতে। ১০৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছে, ঠিক সেই সময় উইকেটে এসে মুশফিক দলকে দিলেন নির্ভরতা। ২০৬ বল খেলে দিনশেষে ৮১ রানে অপরাজিত অধিনায়ক। স্পর্শ করেছেন টেস্টেও তিন হাজার রানের মাইল ফলক। সাকিবের ইনিংসটিও ছিল দারুণ। ১০৩ বলে ১৪টি চারে সাজানো ৮২ রানের ইনিংসের শেষটাই ছিল শুধু বাজে।
সাকিবের আউটের পর সাব্বিরও ফিরে যান দ্রুতই। অথচ ৩৫ বলে ১৬ রান করে ভালো একটা ইনিংস খেলার ভিত মোটামুটি তৈরিই করে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজার বলে এলবিডব্লু হয়ে শেষ হয় তাঁর ইনিংসটি। ২৩৫ রান তুলতেই ৬ উইকেট নেই—ঠিক এই সময় মুশফিকের প্রতিরোধ-লড়াইয়ের সঙ্গী মিরাজ। প্রথম থেকেই বল ব্যাটে আসছিল, মিরাজ কেবল মাথা ঠান্ডা করে নিজের খেলাটা খেলে গেলেন। ব্যাটিং প্রতিভা তাঁর ছিলই, কিন্তু সেটির প্রয়োগ করতে পারছিলেন না। হায়দরাবাদে আজ করে দেখালেন সেটাই। ১০৩ বলে ৫১ রানের এই ইনিংসে বাউন্ডারি দশটি। কাল চতুর্থ দিনে মুশফিক-মিরাজ জুটি আর কতটা যেতে পারেন, তার ওপরই নির্ভর করছে হায়দরাবাদ টেস্টে বাংলাদেশের ভবিষ্যত।
আজকের সকালটা দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলের মতো ছিল না বাংলাদেশের জন্য। দিনের শুরুতেই মুমিনুল হকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে দৃষ্টিকটু এক রান আউটের শিকার তামিম ইকবাল। ভুবনেশ্বর কুমারের করা দিনের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলটি স্কয়ার লেগে ঘুরিয়েছিলেন মুমিনুল হক। উমেশ যাদবের হাতে বল রেখে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়েই মুমিনুলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট তামিম।
সকালের দিকে দারুণ বল করছেন ভারতীয় পেসার উমেশ যাদব। তবে তাঁর বলের ছোবলগুলো ভালোভাবেই সামলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত মুশফিক আউট হয়ে ফিরতে পারতেন শুরুর দিকেই। রান আউটের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। দ্রুততার সঙ্গে একটি রান নিতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছিলেন মুশফিক ও সাকিব। সরাসরি থ্রোর মধ্যে মুশফিক ডাইভ দিয়েছিলেন। ব্যাটের একটি ছোট অংশ ক্রিজ স্পর্শ করায় সে যাত্রা বেঁচে যান মুশফিক।
দিনটা দারুণভাবেই শেষ করল বাংলাদেশ। যদিও এখনো ৩৬৫ রানে পিছিয়ে দল। কাল চতুর্থ দিনে মুশফিক-মিরাজ লড়াইটা কীভাবে করেন, সেটার ওপরই নির্ভর করছে হায়দরাবাদে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।