‘লজ্জিত’ বাইডে
০২ নভেম্বর, ২০২১ ইং,
২৩ কার্তিক , ১৪২৮ বঙ্গাব্দ,
জলবায়ু সম্মেলনের মঞ্চ থেকে গতকাল সোমবার প্যারিস চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গ্লাসগোতে তিনি বলেন, ‘আগের প্রশাসনের এই পদক্ষেপের জন্য আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি খুবই লজ্জিত।’
এই শতকের মাঝামাঝির মধ্যে কার্বন নির্গমন কমানোর প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধানেরা। সর্ববৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী দেশ চীন ২০৬০ সালের লক্ষ্য নিয়েছে। ভারত, রাশিয়ার লক্ষ্য ২০৫০ সাল।
এছাড়াও কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অবিলম্বে বন্ধ করার আর্জি জানানো হয়েছে। সব দেশই তাতে সম্মতি জানিয়েছে। কিন্তু এর জন্য কোনও লক্ষ্য স্থির করা হয়নি। জীবাশ্ম জ্বালানিতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয় দেশগুলো, তা বন্ধ করা নিয়েও কথা হয়েছে।
গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ১২০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রনেতা, শিক্ষাবিদ, পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। সেই যুক্তিতে জলবায়ু নিয়ে যাবতীয় কর্থাবার্তা ‘সিওপি২৬’-এর উপরেই ছেড়ে দিল জি-২০।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জি-২০ সম্মলনে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যা কথা দেয়া-নেয়া হল, তাতে নতুন কিছু নেই। এই গোষ্ঠীর সদস্য সব দেশই জানিয়েছে, আসন্ন বিপর্যয় রুখতে তারা গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখার চেষ্টা করবে। ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতেও অবশ্য এ কথা দিয়েছিলেন রাষ্ট্রনেতারা। যদিও বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটেনি।
এবারে জি-২০-র আয়োজনে ছিল ইটালি। উদ্যোক্তা ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেন, ‘একটা বিষয় আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, যে স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেটা পূরণের জন্য যেন কাজও হয়।’ ‘জি-২০’-তে রয়েছে ব্রাজিল, চীন, ভারত, জার্মানি, আমেরিকা। বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বাস এই বিশ দেশে। ‘বিষাক্ত’ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ৮০ শতাংশ এই দেশগুলির।
জাতিসংঘের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, ভয়াবহ দাম দিতে হবে গোটা বিশ্বকে। ইতিমধ্যেই তা টের পাওয়া যাচ্ছে। একদিকে খরা তো অন্যদিকে বন্যা। ইউরোপে দাবানল তো কানাডা পুড়ছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে। এ বছরের মতো বৃষ্টি, বন্যা, ধস দেখেনি ভারত। জাতিসংঘের সতর্কবার্তা, জলস্তর যেভাবে বাড়ছে, সবার আগে নিচু দেশগুলো সমুদ্রে ডুবে যাবে।
গ্লাসগোর সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস, ৯৫ বছর বয়সি প্রবীণ ব্রিটিশ সাংবাদিক স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো, সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গ। অ্যাটেনবরো বলেন, ‘আমি এক জীবনে পরিবেশের যে বদল দেখলাম, এর ফল ভুগতে হবে ভবিষ্যত প্রজন্মকে। এখনও এই গল্প কিছুটা হলেও বদলানো যায়।’
জেমস বন্ডের ছবির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেন, এটা কিন্তু কোনও ফিল্ম নয়, যে শেষ দৃশ্যে হিরো মেরে ধরে সবাইকে কাত করে দেবে।
সূত্র: রয়টার্স, এপি