ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপের অডিও ভিত্তিহীন: কামরুন নাহার মুকুল

0

ঢাকা, ২৮ জুলাই বুধবার, ২০২১ইং, ১২ শ্রাবণ ১৪২৮।
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপের অডিওকে ভিত্তিহীন ও সুপার এডিটেড বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল।

রাজধানীর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল এবং প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফাঁস হওয়া কথোপকথন এখন টক অব দ্যা টাউন। চার মিনিট ৩৯ সেকেন্ড ধরে চলা ওই ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুল বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে আসার তিন দিনের মাথায় তারা আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন। তাদের কথা মতো নাকি আমাকে চলতে হবে। এর আগের প্রিন্সিপালকে তারা মোবাইল ছুঁড়ে মেরেছে। আমার বাসায় ঢিল মারে। আমার দরজায় লাথি মেরেছে। লাথি মেরে আমার চেয়ার ফেলে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অভিভাবক ফোরাম চায় আমি কিছু আসন ফাঁকা রাখি যাতে তারা ভর্তি বাণিজ্য করতে পারে। আমি বলেছি শিক্ষামন্ত্রী আমাকে এখানে থাকতে বলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আমি যদি এদের কথায় ভর্তি বাণিজ্যের অনিয়ম করি, মন্ত্রীর কাছে আমি তখন কী জবাব দেবো। আমার ইতিহাসে অন্যায়ের কোনো দাগ নেই। এর আগের কোনো প্রিন্সিপাল এখানে কেনো থাকতে পারেনি, এখন বুঝতে পেরেছি।’

নীতির সঙ্গে আপোষহীন এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এবারের ভর্তির লটারির সময়ও তারা ১২০টি সিট খালি রেখেছে। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০-৬০ সিট খালি আছে। মূলত সেগুলোতে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে তারা আমাকে অনেক আগে থেকে চাপ দিচ্ছে।’

তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘মূলত ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে পেরে না উঠে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ ষড়যন্ত্র করছেন জিবি সদস্য ও অভিভাবক ফোরামের লোকজন। আমি এ প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে চাই। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চাই। প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে এটি তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আমি প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে চাই। আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন।’ যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের সবাইকে নিয়ে লড়তে চাই। কোনো অনিয়মকে কখনো প্রশ্রয় দেইনি, দেবোও না।’

ফাঁস হওয়া ওই অডিও ভিএনএসসির দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হেনেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বোর্ডের সদস্যরা।
তারা বলেন, অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এ বছরের প্রথম দিন যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ যদি তাকে প্রতিষ্ঠানে আসার বিষয়ে অনুরোধ করেন, তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি শুধু একজন শিক্ষক নন- ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, সচিবালয় এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত তার পক্ষে আছে বলেও গভর্নিং বোর্ডের সদস্যরা দাবি করেন।

অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মজিদ সুজন বলেন, যোগদানের পর থেকে কলেজের বাসভবনে থাকলেও কামরুন নাহার কখনো নিজ অফিসে বসেন না। অভিভাবকরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও তিনি কারো সঙ্গে দেখা করেন না। ভিকারুননিসার যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবক মারা গেছেন, তাদের বিনা বেতনে পড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষ। সভাপতি হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার স্কুলের জন্য সময় দিতে পারেন না বলে অধ্যক্ষ বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *