প্রণোদনার ঋণ না দেওয়ায় ৭টি ব্যাংককে নোটিশ
করোনাভাইরাসে প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বরাদ্দকৃত ঋণ বিতরণ না করায় সরকারি খাতের সাত ব্যাংককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগ থেকে। ব্যাংক সাতটি হলো সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক।
চিঠিতে সাত ব্যাংকের এমডিকে বলা হয়েছে, এটা স্কিম বাস্তবায়নে আপনাদের গাফিলতি মর্মে পরিলক্ষিত হয়। এ জন্য সাত দিনের মধ্যে ঋণ বিতরণ না করার কারণ ব্যাখ্যা ও ঋণ বিতরণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানাতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক তিন হাজার কোটি টাকা পুনঃ অর্থায়ন স্কিম গঠন করে। নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সক্ষম করা এবং তাঁদের আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড সচল রাখার লক্ষ্যে এ স্কিম সরকারেরও একটি প্রাধিকারভুক্ত স্কিম। স্কিম গঠনের পর ইতিমধ্যে ছয় মাস সময় অতিবাহিত হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য হারে ঋণ বিতরণে সক্ষম হলেও সরকারি সাত ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করেনি।
চিঠিতে সাত ব্যাংকের এমডিকে বলা হয়েছে, এটা স্কিম বাস্তবায়নে আপনাদের গাফিলতি মর্মে পরিলক্ষিত হয়। এ জন্য সাত দিনের মধ্যে ঋণ বিতরণ না করার কারণ ব্যাখ্যা ও ঋণ বিতরণে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানাতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, এ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সোনালী ব্যাংক ১২৫ কোটি টাকা, অগ্রণী ৪০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা ও রূপালী ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ১ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৫ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৪৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি এ কে এম সাজেদুর রহমান খান বলেন, ঋণ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। শিগগির বিতরণ করা হবে
করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে তিন হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে। এ তহবিল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১ শতাংশ সুদে ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয় আর ব্যাংকগুলো ৩ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় এমএফআইগুলোকে। আবার তাদের কাছ থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ঋণ পায় ৯ শতাংশ সুদে। আগে এমএফআইগুলোর ঋণের সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশ। এ তহবিল থেকে জামানত ছাড়াই নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঋণ পাবেন।
বেসরকারি ব্যাংক এ ঋণ দিলেও সাড়া দিচ্ছে না সরকারি ব্যাংকগুলো। এ কারণে সরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাও (এমএফআই) ঋণ পাচ্ছে না। তবে এ ক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসছে। ফলে সারা দেশের প্রায় ৬০ হাজার উদ্যোক্তা ৯ শতাংশ সুদে এমএফআই থেকে ঋণ পেয়েছেন। এ জন্য বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ পেয়েছে ৬৭টি এমএফআই।