না ফেরার দেশে কিংবদন্তি চিত্র নায়িকা কবরী

0

বিশেষ প্রতিনিধি :

বাংলাদেশের কিংবদন্তি চিত্র নায়িকা সারা বেগম কবরী শুক্রবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে কবরীর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সারা বেগম কবরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর করোনাভাইরাস নিশ্চিত হয়েছিল ৫ই এপ্রিল এবং এর তিনদিন পর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে শেখ রাসেল হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক সহ সারাদেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

সারা বেগম কবরীর বর্ণাঢিব জীবনঃ
কবরী ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব কবরীর। এরপর ধীরে ধীরে টেলিভিশন এবং সিনেমা জগতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান তিনি। সেখান থেকে ভারত পাড়ি দেন। কলকাতা গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্র জগতে মনোনিবেশ করেন কবরী । সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবনের শুরু কবরীর। এরপর থেকে প্রায় একশ’টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এগুলোর মধ্যে হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়, আগন্তুকসহ জহির রায়হানের তৈরি উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

১৯৭৮ সালে নায়ক ফারুকের বিপরীতে ‘সারেং বউ’ ছবিতে অভিনয়ের পর সারেং বউ নামে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।

২০০৫ সালে ‘আয়না’ নামের একটি ছবি নির্মাণের মাধ্যমে চিত্রপরিচালক হিসেবেও তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পরেন তিনি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সাথে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ তে প্রকাশিত হয়েছে তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’। সবশেষ সরকারি অনুদানের একটি ছবি নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। নাম ‘এই তুমি সেই তুমি’। শুধু পরিচালনা নয়, এই ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লেখার দায়িত্ব ও তিনি সামলাচ্ছিলেন। এছাড়া ছবিতে তিনি অভিনয়ও করবেন। এরইমধ্যে এ ছবির শুটিংও করেছেন কবরী।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *