জামিন মেলেনি নৃত্যশিল্পী ইভান শাহরিয়ার সোহাগের

0

বিনোদন ডেস্ক:

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। দুবাইয়ে ড্যান্সবারের আড়ালে নারীপাচারের অভিযোগে ১০ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়েছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ।

এর আগে শনিবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। লালবাগ থানার মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া জামিন শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের একটি দল রাজধানীর নিকেতনের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুবাইয়ে ড্যান্সবারের আড়ালে নারীপাচারের অভিযোগে সম্প্রতি আজম খানসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে উঠে আসে কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের নাম। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেফতার করে।’

অভিযানে অংশ নেয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান জানান, গ্রেফতার চক্রটি দুবাইয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে নৃত্যশিল্পী নিয়ে যেতেন। পরে এদের মধ্য থেকে দু-একজন করে রেখে আসতেন। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। এ বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তে এবং পূর্বে গ্রেফতার আসামিদের জবানবন্দিতে কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।

উল্লেখ্য, গত মাসে দুবাই পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে আজম খানসহ নারী পাচারকারীচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই চক্রটি মূলত নৃত্যকেন্দ্রিক। কয়েকজন নৃত্যসংগঠক ও শিল্পী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা দেশের বিভিন্ন নাচের ক্লাব বা সংগঠন থেকে মেয়েদের সংগ্রহ করে কাজ দেয়ার নামে দুবাই পাঠান। পরে দুবাইয়ের হোটেল ও ড্যান্সবারে তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করতেন।

চক্রটির বাংলাদেশের মূলহোতা আজমসহ তার দুই সহযোগী ময়না ও মো. আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডকে গ্রেফতারের পর সিআইডি জানায়, প্রথমে হোটেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০-২২ বছর বয়সী তরুণীদের প্রলুব্ধ করা হতো। বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বেতন হিসেবে ২০-৩০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করা হতো। শুধু তাই নয়, দুবাইয়ে যাওয়া-আসা বাবদ সব খরচও দিত দালালচক্র। কিন্তু দুবাই যাওয়ার পর তাদের হোটেলে জিম্মি করা হয়, জোরপূর্বক দেহ-ব্যবসাসহ ড্যান্সক্লাবে নাচতে বাধ্য করা হয়।

গত আট বছরে এভাবে প্রলুব্ধ করে চাকরির নামে বাংলাদেশের শতাধিক তরুণী-কিশোরীকে দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে। তাদের দিয়ে প্রস্টিটিউশনে জড়াতে বাধ্য করেছে আন্তর্জাতিক নারীপাচারকারী চক্র।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *