চোখ ধাঁধানো তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২২ আশ্বিন ১৪৩০বঙ্গাব্দ,
০৭ অক্টোবর ২০২৩ ইং
ফারহানা আফরোজ রুনা
‘স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার সংযোগ’ শ্লোগান নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের একাংশ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত চোখ ধাঁধানো এই টার্মিনালে আকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বদলে দেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনালের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের পর এই টার্মিনাল থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারক্রাফট পরীক্ষামূলক চালানোর কথা রয়েছে। তা সরাসরি দেখবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত থার্ড টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ সফট ওপেনিংয়ের পর আবার শুরু হবে। তবে আজ সফট ওপেনিং হলেও আগামী বছর থেকে অপারেশনে যাবে কর্তৃপক্ষ।
কী আছে থার্ড টার্মিনালে
তৃতীয় টার্মিনালের ডাবল এন্ট্রি ব্রিজসহ ১২টি বোর্ডিং গেট আগামী বছরের মধ্যে চালু হবে এবং পরবর্তী ১৪টি বোর্ডিং সেতু পরবর্তী সময়ে স্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তৃতীয় টার্মিনালে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের একটি ফ্লোর স্পেস, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন এবং তিনটি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক রয়েছে।
তৃতীয় টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার পর ঢাকা বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এতে বার্ষিক যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা হবে ২৪ মিলিয়ন (পুরানো টার্মিনাল সহ) যা এখন মাত্র আট মিলিয়ন এবং বিমানবন্দরটি প্রতি বছর পাঁচ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডেল করতে পারে।
৩৭টি নতুন এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এরিয়া এবং এপ্রোন এলাকায় সংযোগকারী দুটি ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহন ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে সক্ষম হয়।
নতুন টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর অংশ) এবং একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সাথে সংযুক্ত হবে। এছাড়া আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।
তৃতীয় টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটি ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯-এ শুরু হয়। সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অবশিষ্ট অর্থায়ন করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তৃতীয় টার্মিনালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের আগে বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্স ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে চায়, যা দেশের এভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।