করোনার টিকা বিতরণের নেতৃত্বে ইউনিসেফ

0

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ ঘোষণা করেছে যে কোভিড–১৯–এর টিকা সংগ্রহ ও বিতরণে সংস্থাটি নেতৃত্ব দেবে। সংস্থাটি বলছে, টিকা যখন পাওয়া যাবে, তখন যেন সব দেশ নিরাপদে, দ্রুত ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা পেতে পারে।

৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক টুইটে বলেন, ‘এটি কোভিড–১৯ মোকাবিলায় সব সরকার, উৎপাদক ও বহুপক্ষীয় অংশীদারদের অংশীদারত্ব। টিকার জন্য আমাদের সম্মিলিত সাধনায় ইউনিসেফ তার অনন্য শক্তিগুলো কাজে লাগাবে যাতে সব দেশ নিরাপদ, দ্রুত ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকার প্রাথমিক ডোজগুলো পেতে পারে।’

ইউনিসেফ এমনিতেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা ক্রেতা, যারা বার্ষিক টিকা কার্যক্রমের জন্য প্রায় শখানেক রাষ্ট্রের জন্য প্রতিবছর ২০০ কোটি ডোজ টিকা কিনে থাকে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এর আগেই ১ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করে যে তারা কোভ্যাক্সে অংশ নেবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণার পর থেকেই এই রোগ মোকাবিলায় টিকা ও চিকিৎসার ওষুধ উদ্ভাবন ও সংগ্রহে এককভাবে কাজ করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারি মোকাবিলায় সব দেশেরই উচিত হবে কোনো একটি দেশের সবার জন্য টিকার ব্যবস্থা করার বদলে সব দেশের জনগোষ্ঠীর ঝুঁকির্পূণ অংশের জন্য টিকার ব্যবস্থা করাই নীতি হিসেবে গ্রহণ করা।

ইউনিসেফের বিবৃতিতে বলা হয় যে কোভ্যাক্স গ্লোবাল ভ্যাকসিন ফ্যাসিলিটির পক্ষে ৯২টি নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য কোভিড–১৯–এর টিকা কেনা ও সরবরাহের কাজে নেতৃত্ব দেবে। একই সঙ্গে ইউনিসেফ বিশ্বের ৮০টি উচ্চ আয়ের দেশগুলোর টিকা সংগ্রহের সমন্বয়কের কাজ করবে। সংস্থাটির পক্ষে জানানো হয়েছে, এই ৮০টি দেশ কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিতে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং টিকার অর্থায়নের নিজস্ব বাজেট থেকে তারা তহবিল জোগান দেবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, টিকার জোট দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি), দ্য কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপআই), পিএএইচও, বিশ্বব্যাংক, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং অন্য শরীকদের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে ইউনিসেফ কাজটি পরিচালনা করবে। কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি সব দেশের জন্য উন্মুক্ত, যাতে কোনো দেশই কোভিডের টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়।

বাংলাদেশেরও এই কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে আলাদা করেও বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে টিকা পাওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। ইউনিসেফের এ ঘোষণায় সেই উদ্যোগগুলোর আর কোনো উপযোগিতা আছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

২৮টি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফের সঙ্গে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে, যাতে আগামী এক থেকে দুই বছরে, ইউনিসেফের ভাষায় ‘নজিরবিহীন পরিমাণে’ টিকা উৎপাদন সম্ভব হয়। এ জন্য উৎপাদকদের বিপুল বিনিয়োগও প্রয়োজন হবে।

ইউনিসেফ বলছে, গুরুত্বর্পূণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে রাজি দেশগুলো কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করবে, যাতে করে ঝুঁকির্পূণ বিনিয়োগের মাধ্যমে বড় আকারে টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হয়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *