কমে গেলো স্বর্ণের দাম
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের দরপতনের মধ্যে পড়েছে স্বর্ণ। ফেব্রুয়ারিজুড়ে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ দরপতনের পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এমন টানা দরপতনের মধ্যে পড়ায় ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে স্বর্ণের দাম।
স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বড় দরপতন হয়েছে রুপা ও প্লাটিনামের। গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। রুপার দাম কমেছে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। প্লাটিনামের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এ দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকলে শিগগিরই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দায়িত্বশীলরা।
এ বিষয়ে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর পরও আমরা দেখছি, গত কয়েক দিন ধরে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী। বিশ্ববাজারে দাম কমার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আমরাও স্বর্ণের দাম কমাবো।
২ মার্চ অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩ মার্চ থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা কমিয়ে ৭১ হাজার ১৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৮ হাজার ১ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ৫৯ হাজার ২৫২ এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৮ হাজার ৯৩১ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ভরিতে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা কমানো হয়। সে হিসাবে দুই মাসের মধ্যে দেশের বাজারে ভরিতে স্বর্ণের দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা কমেছে।
স্বর্ণের দাম কমলেও রুপার পূর্বনির্ধারিত দাম বহাল রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ১ হাজার ৪৩৫, ১৮ ক্যারেটের ১ হাজার ২২৫ এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ৯৩৩ টাকা।
শেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ দশমিক ৭২ ডলার বাড়ার পরও সপ্তাহের প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে প্রায় ৩৪ ডলার। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ১ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৩৯ ডলারে থিতু হওয়া প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম গত সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৭০০ দশমিক ৯১ ডলারে নেমে এসেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এই দরপতনের বিষয়ে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিলে বিনিয়োগ অনেকটা একমুখী হয়ে পড়েছিল। বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ কিনে মজুদ করে। এখন ধীরে ধীরে অর্থনীতি সচল হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীরাও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। স্বর্ণের দাম কমার এটি একটি কারণ হতে পারে বলে আমার ধারণা।
এদিকে শেষ কার্যদিবসে দশমিক ২৫ শতাংশ কমার মাধ্যমে গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপার দাম কমেছে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ২৪ ডলার। এই দরপতনের ফলে মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে রুপার দাম ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে গেছে।