এবার প্রস্তুতি নিয়েই নির্বাচনে আসবে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী
১৪ আষাঢ় ১৪২০ বঙ্গাব্দ,
২৮ জুন ২০২৩ইং
জেলা প্রতিনিধিঃ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যতো কথাই বলুক না কেন আগামী নির্বাচনেও বিএনপিকে আসতে হবে। আশা করব ২০১৮ সালের মতো গাধার জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো নয়, এবার আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েই নির্বাচনে আসবে।’
২৮ জুন বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভিন্ন সংস্থা প্রতিনিধিদের উন্নয়ন সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিবের ঈদের পর সর্বশক্তি দিয়ে সরকার পতনে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান বলেন, ‘বিএনপি ও মির্জা ফখরুল সাহেবের মুখে দোতারার সুরের মতো করে এক দফার আন্দোলন আমরা সবসময় শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু, উনারা কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে সেটা আমরা জানি। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব আমরা দেখেছি। সেটি আমরা সামাল দিয়েছি, সরকার পাঁচ বছর টিকেছে। এরপর ২০১৮ সালে আবার নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনে গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতো করে বিএনপি নির্বাচনে এসেছিল।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভিত জনগণের গভীরে প্রোথিত। আমাদেরকে ধাক্কা দিতে গেলে বিএনপিই ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাবে। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেবরা মাঝেমধ্যেই এক দফার আন্দোলন ঘোষণা দেন। উনারা ২০১৩ সালে, আবার ২০১৮ সালেও এক দফা আন্দোলন করেছিল। কিছুদিন আগেও বলেছিল, এক দফা আন্দোলন। ফলে তাদের এক দফা আন্দোলন এখন দোতারার সুরের মতো শোনায়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হচ্ছে। ট্রেনে, বাসে এবং লঞ্চে যারা যাচ্ছেন সবাই ভালো অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। ঈদযাত্রা যাতে ভালো হয় সেজন্য সরকার একদিন ছুটি বাড়িয়েছিল। এজন্য সড়ক পরিবহন, রেলপথ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
‘অবৈধ আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে নাকি দু-একদিন পর আবার আগের মতোই চলবে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করেছে। অন্যান্য জেলাতেও শুরু হয়েছে। ইউটিউব চ্যানেল অবশ্যই যে কেউ চালাতে পারে, কিন্তু ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়ে চাঁদাবাজি করা এবং সেখানে কোনো নিউজ করতে গেলে এতো টাকা দিতে হবে সেটি আবার চিঠি দিয়ে জানানো, রেট করে দেওয়া, এগুলো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সরকারের সম্প্রচার, অনলাইন গণমাধ্যম এবং ক্যাবল নেটওয়ার্ক অপারেটিং নিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘন করে তো কেউ কিছু করতে পারে না। যারা নীতিমালা লঙ্ঘন করছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আমরা চিঠি দিয়েছি সারাদেশেই এই অভিযান চলবে।
এ দিনের সমন্বয় সভা সম্পর্কে চট্টগ্রাম ৭ আসনের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হাছান জানান, দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় এক কোটি মানুষের বাস। সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, রেলওয়ে, বন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে মেট্রোরেল ফিজিবিলিটি স্টাডির অগ্রগতি, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, জঙ্গল সলিমপুরকে অবৈধ বসতি ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় থেকে মুক্ত করা, গৃহহীনদের জন্য স্বল্পমূল্যে ফ্ল্যাটের ব্যবস্থাপনাসহ জনগুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামে লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে সড়ক টানেল। সেটির সাথে নির্মিত আউটার রিং রোড এত নান্দনিক এবং আকাশ থেকে দৃশ্যটি এত চমৎকার যে চট্টগ্রাম শহরটাই বদলে গেছে।