অনেক উন্নত দেশের গণমাধ্যমও বাংলাদেশের মত স্বাধীনতা ভোগ করে না:তথ্যমন্ত্রী

0
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি :

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, অনেক উন্নত দেশেও এ পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে না।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিবিসিকে পৃথিবীর প্রথম সারির গণমাধ্যম হিসেবে ধরা হয়, সেখানে একজন এমপির বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ পরিবেশনের প্রেক্ষিতে মামলা হয়। সেজন্য বিবিসির প্রধান নির্বাহী থেকে শুরু করে পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। যুক্তরাজ্যে একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে ১৬৭ বছরের পুরোনো পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড, যেটি এক সময় বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক ছিল, সেটি বন্ধ হয়ে যায়’।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘৫০ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ডিআরইউ’র সভাপতি মুরসালিন নোমানী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে প্রতিনিয়ত ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। আমাদের দেশে অসত্য সংবাদ, ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয় না এটি কেউ বলতে পারবে না; প্রচুর হয়। কিন্তু এ অসত্য বা ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে কোনো সংবাদপত্র বন্ধ হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেনি। আমাদের দেশে কোনো একজনের বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশন করা হলে সংবাদটি প্রথম পেজে দিলেও প্রতিবাদটি ছাপা হয় তৃতীয় পেজে ছোট করে। টিভিতে কোনো অসত্য প্রতিবেদন হলে তার প্রতিবাদ তো কোনোভাবেই সেখানে যায় না।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সারাদেশের সবার ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য, এটি কোন একটা বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য নয়। কোনো সাংবাদিকের চরিত্রহরণ করে বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা হলে তিনি কোন আইনের বলে প্রতিকার পাবেন? ডিজিটাল আইন যখন ছিল না তখন ডিজিটাল আইনের প্রয়োজনও ছিল না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে এতো কথা হচ্ছে, ডিজিটাল আইনের মতো ইনফরমেশন টেকনলজি অ্যাক্ট রয়েছে ভারতে। তবে আইনের যেন অপপ্রয়োগ না হয়, আমিও আইনের অপপ্রয়োগের বিপক্ষে। এখানে যাতে সাংবাদিক অহেতুক নিগৃহীত না হয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৫০ বছরে গণমাধ্যমের অনেক বিকাশ ঘটেছে। গত ১২ বছরের কথা আমি বলতে চাই। ১২ বছর আগে বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে ৪শ’। এখন দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ১২শ’। ১২ বছর আগে টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি, প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার দায়িত্ব গ্রহণের পর। এখন অনএয়ারে আছে ৩৪টি টিভি চ্যানেল, আরো অনএয়ারে আসার অপেক্ষায় আছে ১১টি। অনলাইন গণমাধ্যম ১২ বছর আগে হাতে গোনা কয়েকটি ছিল। এখন কয়শ’ কিংবা কয় হাজার সেটি দেখার বিষয়। তবে আমাদের কাছে ৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে নিবন্ধনের জন্য। আমরা ইতোমধ্যে দিয়েছি, আরো কয়েকশ’ দেয়া হবে। অর্থাৎ নিবন্ধনের প্রক্রিয়া চলছে।’

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, শওকত মাহমুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘সিটি ব্যাংক-ডিআরইউ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *