অর্থ ঋণ নিই, কারো কাছে হাত পাতি না : প্রধানমন্ত্রী
২১ আষাঢ় ১৪৩০ বঙ্গাব্দ,
০৫ জুলাই ২০২৩ইং,
আব্দুস সাত্তারঃ
কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। এর আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। ফলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। খাদ্য নিরাপত্তার পর এখন সরকারের লক্ষ্য খাদ্য সংরক্ষণ করা, যাতে কারো কাছে চাইতে না হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ (বুধবার) দুপুরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই, হাত পাতি না। তার সুদসহ ফেরত দিই। আগে ভাবনাটা এমন ছিল যে আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি। পদ্মা সেতু হওয়ার পর এখন আর কেউ এত বেশি শর্ত দিতে সাহস পায় না, দেয় না।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে ধাবিত হচ্ছি। পদ্মা সেতু নির্মাণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের একটা বদনাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আজ আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন হয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ৫৪৩ মার্কিন ডলার ছিল, সেটা বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮.৭ শতাংশে এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।’
এক দিনে ১০০ সেতু এবং এক দিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধনকে বিশ্বে বিরল উদাহরণ আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীনকে বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছি। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিলাম। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় দেশ যেন অন্তত এক ধাপ এগিয়ে যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। এজন্য আমি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাই। আজকের বাংলাদেশ আমাদের সেই রূপকল্প বাস্তবায়ন করে আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালন করছি, তখন কিন্তু বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার প্রিয় মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি পেশাদার, প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি গড়ে তোলেন। তিনি কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল এবং সেনাবাহিনীর প্রতিটি কোরের জন্য স্বতন্ত্র ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’ এবং ‘মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’, ১৯৯৯ সালে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করি।’
সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই যেই দেশে আমাদের দেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছে, সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান যখন আমাদের বাহিনীর প্রশংসা করে তখন সত্যিই আমার গর্বে বুক ভরে যায়। এই যে আমরা সম্মান পাচ্ছি, সেটিকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।