বিমানে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে দেশে ফিরে প্রশংসায় ভাসছেন প্রধানমন্ত্রী
বিমানে প্রধানমন্ত্রীকে দেখে সাধারণ যাত্রীরা চমকে উঠেন

0

০৩ আষাড় ১৪২০ বঙ্গাব্দ,
১৭ জুন ২০২৩ ইং,
বিমান বন্দর প্রতিনিধিঃ
সুইজারল্যান্ডে তিন দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ১৬ জুন শুক্রবার রাত ১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য সফর শেষে দেশে ফেরার সঙ্গে এবারের ফেরাটা একটু বেশিই আলাদা। কারণ, এদিন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। আর তাতেই প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
বিমানে প্রধানমন্ত্রীকে দেখে সাধারণ যাত্রীরা চমকে উঠেন। যাত্রীতে পরিপূর্ণ বাণিজ্যিক ফ্লাইটটিতে প্রধানমন্ত্রী যখন তাদের সিটের কাছে যান এবং কুশল বিনিময় করেন, তখন সবাই একদিকে বিস্ময় ও অন্যদিকে আনন্দ অনুভব করেন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “ফ্লাইটে আসনের পাশেই প্রধানমন্ত্রীকে দেখে অনেকেই অবাক ও বিস্মিত হয়েছিলেন।”
যাত্রীদের অনুরোধে এ সময় তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি খুব স্নেহ নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বেশ কয়েকজনকে তার কোলেও নেন।
যাত্রীদের কেউ কেউ গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
এ ঘটনার কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নেটিজেনদের অনেকই প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন।
ফারজানা নিপা নামে একজন একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, “সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফেরার পথে বিমানের সহযাত্রীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই স্নেহমাখা কাজ যদি কানাডা কিংবা পশ্চিমা দেশের কেউ করতো তখন ফুটেজ ভাইরাল হতো। নিজ দেশ বলে আলোচনায় নেই।”
গত ১৪ থেকে ১৫ জুন অনুষ্ঠিত “ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল”-এ যোগ দিতে ১৩ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান প্রধানমন্ত্রী।

১৪ জুন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। ওই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ “ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩” এর প্লেনারিতে ভাষণ দেন।

শেখ হাসিনা মাল্টার প্রেসিডেন্ট ডক্টর জর্জ ভেলার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এরপর আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও সদর দপ্তরে ডিজি আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন।

১৫ জুন তিনি “এ টক অ্যাট দ্য ডব্লিউইএফ’-এ যোগ দেন। পরে ডব্লিউইএফ অফিসে এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) আয়োজিত “নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সন্ধ্যায় ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ড. ওকোনজো আইওয়ালা বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী একটি কমিউনিটি রিসেপশনেও যোগ দেন।
“দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩: সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার” হলো সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে বর্ধিত, সমন্বিত এবং সুসংগত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সোচ্চার হওয়ার একটি উচ্চ স্তরের ফোরাম। এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গ্লোবাল কোয়ালিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও অবহিত করার সুযোগ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম অফিসের ৩৪৭তম অধিবেশনে গভর্নিং বডি স্বাগত জানিয়েছে।

সম্মেলনে বেশ কয়েকজন উচ্চপর্যায়ের অতিথিদের পাশাপাশি নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব তৈরিতে সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভূমিকা তুলে ধরা হয়। সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে ও ন্যায়সংগত বিশ্ব নিশ্চিত করতে বর্ধিত এবং কার্যকর ধারাবাহিক যৌথ পদক্ষেপের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *