জাটকা রক্ষায় ৫ অভয়াশ্রম ঘিরে কঠোর নৌ পুলিশ
জাটকা রক্ষায় দেশের ৫টি অভয়াশ্রম ঘিরে কঠোর অবস্থানে নৌ পুলিশ। ২৪ ঘন্টা টহলের পাশাপাশি চালানো হচ্ছে প্রচারণা। দেশ তথা জেলেদের স্বার্থে সর্বোচ্চটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ-পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম। আজ সকালে ইলিশের বাড়ি হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরের ষাটনল এলাকায় মেঘনাপাড়ের জেলেদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এতে নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক মোল্যা নজরুল ইসলাম, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মৎস্য এবং নদী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংঘঠনের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে নৌ পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভার পর ষাটনল থেকে মোহনপুর পর্যন্ত জেলেদের নিয়ে একটি নৌ র্যালির আয়োজন করা হয়। এতে ‘জাটকা ইলিশ ধরবো না, জেলের ভাত খাবো না’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অংশ নেন স্থানীয় জেলেরা।
প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিল (দুই মাস) সরকার ঘোষিত ইলিশ মাছের পাঁচটি অভয়াশ্রম এলাকাতে জাটকাসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ইলিশের অভয়াশ্রমগুলো হলো চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার, ভোলা জেলার মদনপুর বা চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার, ভোলা জেলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া-ভেদরগঞ্জ উপজেলা অংশে ২০ কিলোমিটার ও বরিশাল জেলার হিজলা মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ৮২ কিলোমিটার এলাকা। ইলিশের অভায়শ্রম ও ইলিশের বাড়ি হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরের ষাটনল থেকেই অভিযানের পাশাপাশি প্রচারণা শুরু করেছে নৌ পুলিশ।
নৌ পুলিশ প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা কোনও জেলেদের গ্রেফতার বা তাদের জাল-নৌকা জব্দ করতে চাই না। আমরা দেশের স্বার্থে, জেলেদের স্বার্থে নদীর সম্পদ বৃদ্ধি করতে সরকারি বিধি নিষেধ কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছি। জাটকা ইলিশ না ধরলে এসব ইলিশ বড় হয়ে ডিম পাড়বে এবং বেশি ওজনের ইলিশ ধরতে পারলে জেলেদেরই উপকার হবে। জনগণ সচেতন হলে জাটকা, মা ইলিশসহ সকল মাছই সহজলভ্য হবে এবং দেশীয় আমিষের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব হবে। প্রতিবছর জাটকা সংরক্ষণ করায় ইলিশের উৎপাদন আগের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খাঁন মজলিস বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত দুই মাসে জাটকা সংরক্ষণের অংশ হিসেবে ১১৮টি অভিযান চালানো হয়েছে, ২১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২০টি মামলা, ৮ জনকে জেল-জরিমানা ও ৬টি নৌকা জব্দ করা হয়েছে।