কামরুন নাহার মুকুলের আরেকটি ফোনালাপ ফাঁস
তারিখ: ৩০জুলাই শনিবার,২০২১ইং।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুলের আরও একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। কয়েকদিন আগেও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের উপদেষ্টা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর সঙ্গে অধ্যক্ষের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়।
ওই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর অধ্যক্ষ কামরুন নাহার বলেছেন, ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ করায় তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে। ‘সুপার এডিট’ করে ফোনালাপের একাংশ ফাঁস করা হয়েছে।তবে ওই ফোনালাপের অশালীন কথাবার্তার জন্য নেতিবাচক আলোচনার মুখোমুখি হন শিক্ষা ক্যাডারের সাহসী ও সৎ এই কর্মকর্তা। ফোনালাপে কামরুন নাহার কথা বলছিলেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্য মনিরুজ্জামান খোকনের সঙ্গে।
২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার , সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ২৭ মিনিট ৩ সেকেন্ডের আরও একটি ফোনালাপটি।
আলাপের একপর্যায়ে গভর্নিং বডির সদস্য মনিরুজ্জামান খোকন অধ্যক্ষকে বলেন, ‘আমি কি একবারও বলেছি আমাকে দেন? আমরা যাদের কাছে কৃতজ্ঞ, বিভিন্ন সময় যাদের কাছে আমাদের যেতে হয় তাদের রিকোয়েস্ট রাখার সুযোগ আছে। এরা তো ভালো ফ্যামিলির বাচ্চা, এরা তো প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করবে। এটুকু দায়িত্ব যদি না নেন। আমরা তো আপনার পক্ষেই আছি। ইভেন মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে ফোন গেছে।’
এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে বলেন, ‘স্যার (গভর্নিং বডির সভাপতি) তো সচিব স্যারের কাছে পাঠিয়েছেন। সচিব স্যার তো হ্যাঁ-না একটা কিছু নির্দেশ দেবেন।’
এ সময়ে খোকন বলেন, ‘আরে সচিব স্যার কিছুই বলবে না। সচিব স্যারকে আমি দেড় বছর কাছ থেকে দেখেছি।’
খোকন আরও বলেন, ‘আমি কাছে থেকে চিনি তো, উনি (সচিব) কোনও দিনই হ্যাঁ বা না বলবেন না।ৃ আমি কিন্তু রেজাল্টটা আপনাকে দিয়ে দিলাম।’
অধ্যক্ষকে খোকন বলেন, ‘আপা আপনার টিঅ্যান্ডটি ফোন আছে না বাসায়? অনেক সময় টিঅ্যান্ডটিতে কথা বলা ভালো।’
কামরু নাহার এ সময় খোকনকে বলেন, ‘শোনেন, আমাকে দেখেছেন আমি কিন্তু মানুষটা দুই নম্বর বা জটিল এই টাইপের কিছু না।’
খোকন অধ্যক্ষকে বলেন, ‘সেটা আমি বুঝছি। আপা আমি বলি, আপনি একটা বাইন্ডিংসের মধ্যে আছেন সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু বিষয়টা হলো কী, আপনি বিষয়টি আমাদের ওপর ফেলাবেন। এটা হলো প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে।’শিক্ষার্থী ভর্তির প্রসঙ্গ টেনে খোকন বলেন, ‘ৃক্লাস নাইনের বাচ্চাগুলোরে আপনি ভর্তি করালেন না, এটা কি ঠিক করছেন, বলেন?’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘এখন তো কোনও ভর্তি করাৃ।
আগের ভর্তি প্রসঙ্গে খোকন বলেন, ‘ক্লাস নাইনের ইংরেজি ভার্সনের কমার্সের সেকশনটা, প্লাস ক্লাস নাই নটায় ভালো শিক্ষার্থী ভর্তি নেবেন না?
এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ বলেন, ‘এটা তো স্যার প্রতিবেদন চাইছে, প্রতিবেদন পাঠাইছি।’
খোকন বলেন, ‘ভর্তিটা প্রতিবেদন চাইলে কী হবে?’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘স্যার জানতে চেয়েছে, এখানে অসুবিধা কী?’
খোকন বলেন, ‘কিন্তু এপ্রিল মাস শেষ হয়েছে, কবে দেবেন সার্কুলার?’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘তখনই ভর্তি হয়নি। গত জানুয়ারিতেই ভর্তি হয়নি। তখন আমরা ছাত্র পেলাম না। ..।’
খোকন বলেন, ‘গত বছর দেরি করেছে তো আপনি জানেন না। গত বছর প্যানডেমিক শুরু হয়ে গেলো না?
অধ্যক্ষ বলেন, ‘এবার তো মহাপ্যানডেমিকের মধ্যে আছি?’
খোকন বলেন, ‘এখন না প্যানডেমিক? জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে এই সার্কুলার দিতে পারলে কী হয়ে যেতো না? আপনি ভর্তিকে অ্যাভয়েড করছেন কেন? কারণটা কী?’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘ভর্তি অ্যাভয়েড করবো না। ভর্তি নিয়েই যত বাণিজ্য আপনাদের এখানে।’
খোকন বলেন, ‘ভর্তি আপনি নিজের হাতে করতে পারবেন না, তাহলে তো আপনি যোগ্যতা রাখেন না ভর্তিটা কন্ট্রোল করার। ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছে, তাতে কোথাও কিছু হয়েছে, কোনও সমস্যা হয়েছে?’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘যদি সহজ হতো, বৈধ হতো, বৈধ মনে করতো, তাহলে তো কোর্টে যেতে হতো না। কোর্ট থেকে হয়ে তারপর আসতে হয়েছে। এটা একটা হ্যারাজ না?
খোকন বলেন, ‘আরে কোর্টে গেছে, কোর্ট কী আমাদের আটকাতে পেরেছে। আপনি যদি কোর্টের চিন্তা করেন তাহলে আপনি ভিকারুননিসার প্রিন্সিপ্যালগিরি করতে পারবেন না।’