করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ফকির আলমগীর
বিশেষ প্রতিনিধি:
২৩ জুলাই শুক্রবার, ২০২১
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তার মারা যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেন ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।
ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তার বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউ ইউনিটের ইনচার্য ডা. আমিনা সুলতানা ফকির আলমগীরের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন।
কয়েক দিন ধরে ফকির আলমগীর জ্বর ও খুসখুসে কাশিতে ভুগছিলেন। পরে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন, তিনি করোনা পজিটিভ। সেদিনই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর তাকে গ্রিন রোডের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই সময় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রয়োজন পড়লে সেখান থেকে তাকে গুলশানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তাঁর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। যে কারণে জটিলতা বাড়তে থাকে। হাসপাতালে ভর্তির পর দুই ব্যাগ প্লাজমাও দেয়া হয়েছিল।
ফকির আলমগীর ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেব ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন গুণী এই শিল্পী। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলে। গানটি লিখেছেন আলতাফ আলী হাসু। কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর।