রাজকীয় প্রমোদতরীতে বঙ্গোপসাগরে ভ্রমণের সুযোগ

0

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামের বিখ্যাত কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটির একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পর্যটকদের আন্তর্জাতিক মানের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিতে জাপান থেকে বিলাসবহুল এই ক্রুজশিপটি কেনা হয়েছে। জাহাজটির আগের নাম ‘সালভিয়া মারু’ হলেও বাংলাদেশে নিয়ে এসে এটিকে ‘এমভি ওয়ান বে’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। গত শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। বর্তমানে এটি চট্টগ্রাম মেরিন ফিশারিজ অ্যাকাডেমি জেটিতে নোঙর করা আছে। আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে সরকারের নির্দেশনা পেলে প্রমোদতরীটি পর্যটকদের সেবা দেয়া শুরু করবে।

প্রাথমিকভাবে এটি ভ্রমণপিপাসুদের কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত সাগরে ভ্রমণের আনন্দ দেবে। তবে জাহাজটি যেহেতু আইএমও রেজিস্টার্ড সমুদ্রগামী তারকামানসম্পন্ন জাহাজ। সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ও আশপাশের দ্বীপাঞ্চলে প্রমোদভ্রমণেরও চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে জাহাজটি বার্থিংয়ের জন্য কক্সবাজারের দরিয়ানগরে জেটিঘাট নির্মাণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, জাপানের কোবেই শহরের মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজে তৈরি এই ক্রুজশিপটির দৈর্ঘ্য ৩৯৩ ফুট, প্রস্থ ৫৫ ফুট ও ১৮ ফুট প্রায় ড্রাফট রয়েছে। এটির গড়গতি ঘণ্টায় ১৬ দশমিক ১ নটিক্যাল মাইল এবং সর্বোচ্চ গড়গতি ঘণ্টায় ২৪ নটিক্যাল মাইল। তবে বাংলাদেশের উপকূলীয় সমুদ্রপথে এই জাহাজ প্রতিঘণ্টায় গড়ে ১৮ থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম।

এ প্রমোদতরীতে থাকছে দুই হাজার প্রেসিডেন্ট স্যুট, বাংকার বেড কেবিন, টুইন বেড কেবিন, আরামদায়ক চেয়ারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আসন। আরও আছে একটি রেস্তোরাঁ, স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন এবং কয়েন পরিচালিত ঝর্ণা। কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নতুন আঙিকে সাজাবেন, এর ফলে এ জাহাজে দুই হাজারের বেশি আসনের ব্যবস্থা থাকবে।

জাহাজটি একসময় টোকিও থেকে ওশিমা-তোশিমা-নিজিমা-শিকিনিজিমা-কোজুশিমা এবং গ্রীষ্মে টোকিও বে নাইট ক্রুজ ‘টোকিও ওয়ান নুরউইসন’ হিসেবে যাত্রা করত।

জাহাজ শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট ভেসেল ফাইন্ডার জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়। ৯ সেপ্টেম্বর এটি পূর্ব চীন সাগর অতিক্রম করছিল। ১৫ সেপ্টেম্বর জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। ১৯ সেপ্টেম্বর ‘এমভি ওয়ান বে’ বিলাসবহুল ক্রুজটি আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়।

কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেডের অ্যাডমিন কামাল উদ্দিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘গত শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রামে এসে পৌঁছায়। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাহাজটি যাত্রীসেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। শুরুতে আমরা সংস্কারের ব্যাপক পরিকল্পনা নিলেও জাহাজটি হাতে পাওয়া পর মনে হচ্ছে, অতটা সংস্কারের প্রয়োজন হবে না। আশা করছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অক্টোবরের শেষ নাগাদ আমরা বাংলাদেশের মানুষকে সেবা দিতে পারব।’

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *