দেশে করোনা সংক্রমণের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ, দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণের আশঙ্কা

0

দিনবদল ডেস্ক:

সংক্রমণ ঠেকানোর কার্যকর কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদদের আশঙ্কা, একটি দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশে ছয় মাসের মাথায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে। তবে রোগী শনাক্তের হার এখনো অনেক বেশি। জনসংখ্যার অনুপাতে নমুনা পরীক্ষাও কম হচ্ছে। এতে প্রত্যন্ত গ্রামে ও শহরের কিছু অঞ্চলে সন্দেহভাজন অনেকে পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছেন।

দেশে করোনা সংক্রমণের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ ৮ সেপ্টেম্বর। ছয় মাস আগে ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্তের তথ্য জানায় সরকার। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে থাকে। জুনে তা তীব্র আকার ধারণ করে। জুলাইয়ের শুরু থেকে পরীক্ষা কমানোয় নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যাও কমতে থাকে। কিছুদিন ধরে শনাক্তের হারও কিছুটা কমেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব নির্দেশকের মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে কি না বোঝা যায়, তার কোনোটিই দেশে দেখা যাচ্ছে না। নতুন রোগীর সংখ্যা, পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ও মৃত্যুর তথ্য বলছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ থেকে বাংলাদেশ এখনো দূরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, টেস্টিং (পরীক্ষা), ট্রেসিং (আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা), আইসোলেশন (রোগীদের বিচ্ছিন্ন রাখা)—এগুলো যারা যথাযথভাবে করেছে তারা সংক্রমণ কমিয়ে আনতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এসব যথাযথভাবে হচ্ছে না। দুই-তিন মাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় মানুষ বের হতে বাধ্য হচ্ছে। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। অন্যদিকে অনেকে পরীক্ষার বাইরে রয়ে গেছে, অনেকে উপসর্গবিহীন। এসবের ফলে বাংলাদেশ একটি দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে ফিরে আসা কঠিন হবে।

সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশে সংক্রমণের পঞ্চম মাসের তুলনায় ষষ্ঠ মাসে নতুন রোগী শনাক্ত, পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার কমলেও মৃত্যু সেভাবে কমেনি। ষষ্ঠ মাসে (এক দিন এখনো বাকি) ১ হাজার ১৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের মাসে মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ১৬৮ জনের। এই মাসেও ৭২ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে, অবশ্য তা আগের মাসের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কম। এই মাসে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম।করোনার হালনাগাদ পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটার তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণ শনাক্তের হার বেশি এমন দেশের তালিকায় এখনো শীর্ষ দশে আছে বাংলাদেশ। আর গত দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি রোগী বেড়েছে, এমন তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *