কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দুর্যোগকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটির পক্ষে “শুভেচ্ছা উপহার” বিতরণ।

0

মানবিক হয়ে মানবিকতার ছোঁয়া নিয়ে কিছু হৃদয়বান মানুষদের উদ্যোগে পুরো দৌলতপুর উপজেলার অসচ্ছল ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সম্মানিত করার লক্ষ্যে প্রায় ২৩০ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মাঝে ঈদ শুভেচ্ছা উপহারের ব্যবস্থা করেছেন ” দুর্যোগকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটি “। করোনা মহামারির এমন ক্রান্তিকালীন সময়ে ছোট ছোট মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মধ্যে অনেকেই খারাপ অবস্থায় দিননিপাত করছে। এবার তারাবির নামাজ মসজিদে সকলে মিলে পড়ার সুযোগ না থাকায়, অনেক ছোট ছোট মসজিদগুলোর পক্ষে তাদেরকে নির্ধারিত সম্মানী দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। তাদের বাস্তব অবস্থা অনুধাবন করে তাদের পাশে মানবিকতা নিয়ে সবাইকে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে ফান্ড সংগহে কাজ শুরু করে ” দুর্যোগকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটি “।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও দুর্যোগকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাকীল খান বলেন, মহামারী করোনায় অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো ইমাম ও মুয়াজ্জিনরাও খারাপ অবস্থায় দিননিপাত করছে। তারা আত্মসম্মান বোধের জন্য অন্যান্যদের মতো ত্রাণ সহয়তা নিতে লাইনেও দাড়াতে পারে না। তাদের কষ্টের অনুভুতিকে ধারন করেই তাদের পাশে দাড়িয়ে মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করতেই ফান্ড গঠনের ক্ষুদ্র চেষ্টা। যারা পরিপ্রেক্ষতি প্রতিটি ওয়ার্ডে নুন্যতম ১ জন অস্বচ্ছল ইমাম/ মুয়াজ্জিনদের তালিকা করে দৌলতপুর উপজেলার মোট ২৩০ জন সম্মানিত ইমাম/মুয়াজ্জিনের কাছে আর্থিক সহায়তা পৌছে দেওয়া হচ্ছে। যারা আমাদের পাশে থেকে ফান্ড গঠনে সহযোগিতা করেছেন সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

তিনি আরো বলেন,ভবিষ্যতে এই কমিটি যে কোন দুর্যোগ/ বিপদে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের পাশে দাড়াবে।

কমিটির সদস্য সচিব সুহাস আহমেদ বলেন, ধর্মীয়ভাবে যারা আমাদের আমৃত্যু সহযোগিতা করেন, এমনকি মৃত্যু পরবর্তী দাফন-কাফন ও কবরেও তাদের স্পর্শ আমাদেরকে ধন্য করে। সেইসব ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানিত করার ক্ষুদ্র প্রয়াস।

কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, ইতালি প্রবাসী মোঃ এনামুল হক বলেন, এই দুঃসময়ে যারা মাঠে থেকে আমাদের এই উদ্যোগকে সফল করতে সহযোগিতা করেছেন সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। উপজেলার সম্মানিত ইমাম/মুয়াজ্জিনদের পাশে দাড়ানো মানবিক দায়িত্ববোধ।

কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বুলবুল আহমেদ বকুল বলেন, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য মুলমন্ত্রকে ধারণ করে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের পাশে দাড়ানোর জন্য আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।

কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, বি- আর পাওয়ারজেন লিঃ এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক, দৌলতপুরের কৃত্বি সন্তান প্রকৌশলী মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, বৈশ্বিক এ দুর্যোগে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সহায়তা করা আমাদের ধর্মীয়,সামজিক ও মানবিক দায়িত্ব। দায়িত্ব ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। যারা এই মহৎ কাজে কমিটিতে পরিশ্রম করেছেন এবং যারা সহযোগিতা করেছেন সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ।

কমিটির সদস্য রিজভী হাসান মাহমুদ হিরন বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্বের ন্যায় দৌলতপুর উপজেলার মানুষও দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য জন্য সামান্য চেষ্টা।সমাজের সকল বিত্তবান মানুষদের প্রতি আমার আকুল আবেদন আসুন আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়ায়।

কমিটির সদস্য ইঞ্জিঃ এস এম মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত। ভয়াল এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও। এই মহামারী থেকে কবে মুক্ত হব আমরা তা আমাদের অজানা। এই দুর্যোগের সময় আপদকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটির মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার নিদর্শন স্বরূপ আমাদের উপজেলার সম্মানিত ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের পাশে সামান্য সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়াতে পেরে আমরা আনন্দিত।

দুর্যোগকালীন ইমাম ও মুয়াজ্জিন সহায়তা কমিটির উদ্যোগকে সফল করতে কমিটিতে আরো সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোঃ আলমগীর হোসেন,তাসফীন আবদুল্লাহ ,মোঃ সুমন,আল আমিন
,আদনান জুয়েল, প্রভাষক তানজিন হাসান শাহিন ,আকাশ বিশ্বাস
,মাসুূদ পারভেজ,মনিরুজ্জামান মুন্না
,মাহী বিশ্বাস,মোঃ ফিরোজ খান ,মোঃ বিল্লাল হোসেন,মোঃ স্বপন আলী
,মোঃ হেলাল উদ্দিন ,মোঃ রোকনুজ্জামান স্বপন। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে শুক্রবার করোনা মহামারিতে সমস্যায় থাকা রিফাইতপুর ইউনিয়নের ১৪ জন, রামকৃষ্ণপুর-১৬ জন,দৌলতপুর ১৪ জন, চিলমারী-১৭জন, মরিচা-১৬জন, ফিলিপনগর -১৮ জন,প্রাগপুর-১৫ জন,আড়িয়া -১৪জন, মথুরাপুর -১৫ জন, আদাবাড়ীয়া -১২জন, পিয়ারপুর-১২জন, বোয়ালিয়া-১২জন, খলিশাকুন্ডি-১৩জন,হোগলবাড়িয়া-১৪জন, ইমাম পরিষদের সভাপতির মাধ্যমে ১২ জনসহ উপজেলার সর্বোমোট ২৩০ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কাছে সহযোগিতা পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ নেন।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *