চুলের পাকা রোধ করবেন যেভাবে

heir

চুলের অকালপক্কতার সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। খাদ্যাভ্যাস, কায়্যিক পরিশ্রমের অভাব, খাবারে নানা কেমিকেলের উপস্থিতি, পর্যপ্ত ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া, দুঃশ্চিন্তা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতাসহ নানা কারণে অল্প বয়সেই পাক ধরতে পারে চুলে। আর তরুণ বয়সে চুল পাকা বেশ বিব্রতকর ব্যাপারই বটে। যদিও সাময়িক সমাধান হিসেবে অনেকে চুলে কলপ ব্যবহার করে থাকেন। তবে এতে চুল একেবারে কালো হয় না। তার পাশাপাশি কলপের উপাদান নিম্নমানের হলে তা মাথার চামড়ার ক্ষতি করতে পারে। অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। অথচ, প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে থাকা নানা উপাদান দিয়ে চুলের অকালপক্কতার চিকিৎসা উপকরণ তৈরী করা সম্ভব।

আসুন চুল পাকা রোধের কয়েকটি উপায় দেখে নেয়া যাক –

পেঁয়াজ বাটাঃ
মশলা হিসেবে বাংলাদেশে কমবেশি সব রান্নাঘরেই পেঁয়াজ থাকে। আর পেঁয়াজ বাটা চুল পাকা রোধের অত্যন্ত কার্যকরী অস্ত্র। পেঁয়াজ ভালোমত বেটে নিয়ে প্রতিদিন কিছুক্ষণ মাথার চামড়ায় ও চুলে ম্যাসাজ করলে এবং চুলে পেঁয়াজ বাটা শুকিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই পাকাচুল কালো হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, চুল পড়া বন্ধ হয়ে নতুন চুল গজাতে শুরু করবে।

আমলকি ও লেবুর রস মিশ্রণঃ
আমলকি ও লেবু এই দুটো ফলের পুষ্টি গুণ অত্যন্ত বেশি। শরীরের মেদ কমানো, হৃদপিন্ডের সমস্যা ইত্যাদি অভ্যন্তরীণ সমস্যার পাশাপাশি চামড়ার ইনফেকশন এবং মাথার চামড়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগান দেয়ার ক্ষেত্রে এই দুটো ফলের জুড়ি নেই। তাই অকালে চুল পাকা রোধের জন্য বাজার থেকে আমলকির গুঁড়া কিনে এনে তা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে মাথার চামড়ায় ম্যাসাজ করুন, তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফলাফল নিজেই টের পাবেন।

নারিকেল তেল এবং লেবুর রসঃ
চুলের যত্নে নারিকেল তেলের জুড়ি নেই। আর লেবুর গুণাগুন তো আগেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাকা চুলের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে প্রতিদিন ৪ চা চামচ নারিকেল তেলের সাথে আড়াই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে উক্ত মিশ্রণ চুলের গোড়ায় এবং মাথার চামড়ায় লাগান। দুই সপ্তাহের মধ্যেই পাকা চুল কালো হয়ে উঠবে। তার পাশাপাশি আপনার মাথার চামড়া সুস্থ থাকবে, খুশকি হবে না এবং চুলও হবে উজ্জ্বল।

গাজরের রসঃ
গাজর একটি পুষ্টিকর সবজি উপাদান। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলের সিংহভাগ গাজর একাই পূরণ করার ক্ষমতা রাখে। চুলের যত্নেও গাজর বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তাই বাজার থেকে গাজর কিনে এনে সেটিকে ব্লেন্ডারে পানি, চিনি মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। গাজরের যে জুস পাওয়া যাবে, সেটি নিয়মিত পান করুন। প্রতিদিন অন্তত একগ্লাস করে গাজরের রস পান করলেই আপনার পাকা চুলের প্রতিকার পাওয়া শুরু করবেন। শুধু চুল নয়, সেইসাথে আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতেও এই গাজরের জুস সাহায্য করবে।আর ত্বক হবে উজ্জ্বল লাবন্যময়।

উপরের পদ্ধতিগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে সহজে ঘরে বসেই অকালে চুল পাকা রোধ করা সম্ভব। সাধারণত পুষ্টিহীনতা, টেনশন, অবসাদ, ঘুম কম হওয়া এগুলোর কারণে অল্প বয়সে চুল পাকতে পারে। তাই এই সমস্যা প্রতিরোধের জন্য প্রচুর শাকসবজি খাবেন, পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করবেন এবং অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন শুধু পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানিই আপনার শরীরের অনেক রোগ দূরে রাখতে পারে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *