৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা

0

আগামী ২৫ এপ্রিলের পর সরকার নতুন করে ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সরকার সাধারণ ছুটি বাড়ালেও পণ্য সরবরাহ তথা আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে দেশের সব শুল্ক স্টেশন খোলা থাকবে। বুধবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। তবে এক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সব ধরনের সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য খালাসের লক্ষে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালানোর কথা বলা হয়েছিলো।
করোনা ভাইরাসের কারণে অফিস-কারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণাসহ দেশজুড়ে ২৬ মার্চ থেকে চলছে জরুরি ছুটি, অনেক জেলা আবার পুরোপুরি লকডাউনে আছে। প্রথম দফায় ছুটি ১৪ এপ্রিল শেষ হবার কথা ছিল, কিন্তু করোনার কারণে সেই ছুটি আবারও বাড়ানো হয়েছিল। সর্বশেষ সরকারি ঘোষণা অনুসারে আগামী ২৫ এপ্রিল ছুটি শেষ হবে। রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাশহর থেকে মানুষজন গ্রামে চলে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে, বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই অবস্থায় ছুটি আবারও বাড়তে পারে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন সময় বাড়িয়েছে, আর মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ অবস্থার ভয়াবহতা অনুমান করে ২৮ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
২৫ এপ্রিল ছুটি শেষ হলে স্বাভাবিকভাবেই ২৬ এপ্রিল গার্মেন্টসসহ যাবতীয় অফিস-আদালত খুলে যাবে। আর ২৬ তারিখ কাজে যোগ দিতে হলে ২৫ তারিখে বিভিন্ন জেলা ও গ্রামে থাকা জনগণকে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় ফিরতে হবে। সেটা কীভাবে সম্ভব? কারণ ২৫ তারিখ পর্যন্ততো গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। একইরকম পরিস্থিতি দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে আগেই ফিরতে হবে ২৬ তারিখের আগেই। এছাড়া ২৫ এপ্রিল পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা গেলে পরেরদিন প্রথম রমজান, সেজন্য পূর্ব প্রস্তুতিও রয়েছে।
গত ১৪ এপ্রিল ছুটি শেষ হবার আগেই ছুটি বাড়ানোর ফলে গার্মেন্টস-কারখানা খোলা বা বন্ধের বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ঘোষণা না আসাতে হাজার হাজার শ্রমিক রাজধানীমুখি হয়েছিল। গণপরিবহন বন্ধ থাকার ফলে পায়ে হেঁটে নয়তো গাদাগাদি করে স্থানীয় পরিবহনে চেপে তারা চলে এসেছিল কাজে যোগ দিতে। তবে ফিরতে না ফিরতেই তারা জানতে পারলো, কাজে যোগ দিতে হবে না। এই অবস্থায় তারা আবার একইরকম কষ্ট করে আবার বাড়ি ফিরে গেছে। আবারও কি সেরকম কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে?
এই বিষয়ে কে সিদ্ধান্ত নেবে, তা নিয়ে স্পষ্টত একটি দ্বিধা দেখা যাচ্ছে সরকার ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে। ব্যবসায়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথরিটি চাইবে যত দ্রুতসম্ভব তাদের প্রতিষ্ঠান খুলে যাক, কিন্তু করোনার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করার দায়-দায়িত্ব শুধুমাত্রই সরকারের। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি, কারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সরকারকেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কবে সবকিছু খুলে দেয়া যেতে পারে, খুললে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষজন কীভাবে কর্মস্থলে ফিরবে, কীভাবে ফিরবে, এইসব বিষয়ে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্তে আসা খুবই জরুরি। আমাদের আশাবাদ, সরকারের বিভিন্ন মহল এবিষয়গুলো নজরে এনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *