মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার জন্মদিন আজ
দিনবদল ডেস্ক:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদরের ছোট কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার জন্ম ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ সালে, মধুমতির তীরে ছোট্ট গ্রাম টুঙ্গীপাড়ায়। তাঁর সাদামাটা জীবনযাপন সবারই জানা। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সংগ্রাম করে দেশের জন্য নীরবে নিবৃত্তে কাজ করে যাচ্ছেন। মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পর্দার অন্তরালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে, সাহস, পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, ঠিক তেমনই বড় বোন শেখ হাসিনার পাশে থেকে তিনি পরামর্শ, অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্য থেকেই আমরা সবাই জানি, ছোট বোন তাঁর কত বড় পরামর্শদাতা।শেখ রেহানা যখন বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই দেখেছে তাঁর পিতা বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের জন্য মাসের পর মাস কারাগারে থাকছেন। কারাগারই পিতার আসল ঠিকানা। শৈশব ও কৈশোরে পিতৃস্নেহ থেকে ছিলেন বঞ্চিত। এক স্মৃতিচারণে তিনি লিখেছেন, ‘ছোটবেলা দেখতাম আব্বা প্রায় সময়ই জেলে থাকতেন। আব্বা যখন বাইরে থাকতেন কিংবা মুক্ত থাকতেন, তখনই আমাদের কাছে ঈদ মনে হতো। আব্বাও জেলের বাইরে, ঈদও এলো এমন হলে তো কথাই নেই। আমাদের হতো ডাবল ঈদ’।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। বিশ্বাস তো কাউকে না কাউকে করতেই হবে। আমরা যদি সবার উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতাম তাহলে ১৫ আগস্টের পর তো দুই বোন ঘরেই বসে থাকতাম। কার ভিতর কি আছে বলা মুশকিল হলেও সবার উপর থেকে তো বিশ্বাস তো হারানো যায় না। যে রাজনীতি ছোট্ট বয়সে নিজেদের কাছ থেকে বাবাকে সবসময় বিচ্ছিন্ন রাখত, সেই রাজনীতি যখন পুরো পরিবারকে ছিনিয়ে নিল, এমন মনোভাব নিজের ভিতরে কাজ করলেও একসময় এসে মনে প্রশ্ন জেগেছে, পুরো পরিবার নিয়ে গেলেও আল্লাহ কেন তাদের দুই বোনকে বাঁচিয়ে রাখলেন। নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তার কোন উদ্দেশ্য আছে? মনে হলো- এই খুনিদের ধরার জন্যই হয়তো আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন’।
তারপর পড়ালেখার কথা ভাবলাম। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী শান্তি নিকেতনে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিরাপত্তা দিতে রাজি না হওয়ায় লন্ডন যেতে হলো। লন্ডনে সে এক নতুন পরিস্থিতি। তিনি তখন মাত্র বিশ বছরের একজন তরুণী। নিজেই নিজের অভিভাবক। প্রথমে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন একটা চাকরি। চাকরি হল একটি লাইব্রেরি ও পাবলিশার্স কোম্পানিতে। পরিচিত সবার আচরণ মুহূর্তেই অপরিচিত মনে হলো। তখন নিজের একজন সঙ্গীর প্রয়োজনীয়তার অনুভব হলে ১৯৭৭ সালে ড.শফিক সিদ্দিকের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। ড. সিদ্দিক তখন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। যদিও বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেই বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। সেদিন পরিবারের একমাত্র আপনজন বড় বোন শেখ হাসিনা টাকার অভাবে ছোট বোনের বিয়েতে উপস্থিত হতে পারেন নি।
তারপর আস্তে আস্তে নেমে পড়েন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে জনমত গঠন করতে। ১৯৭৯ সালের ১০ মে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে বড় বোন শেখ হাসিনার নাম দিয়ে ব্যানার টানিয়ে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা। তারপর থেকে লন্ডনসহ ইউরোপের প্রতিটি দেশে বিচারের দাবিতে সভা সমাবেশ করে ঘাতকদের বিচার ও স্বৈরশাসকদের অবৈধ ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যান।
১৯৬৯ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় বঙ্গমাতার ভূমিকায় গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধুর নিঃশর্ত মুক্তি বাংলার ইতিহাসকে পরিবর্তন করেছিল ঠিক তেমনি ১/১১ সরকারের সময় বড় বোন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত ও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।