বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করা উচিত-প্রধান বিচারপতি
৩১ শ্রাবন ১৪৩০বঙ্গাব্দ,
১৫ আগস্ট ২০২৩ইং
আদালত প্রতিনিধিঃ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পেছনে যে কুশীলবরা ছিল তাদের আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, কিছু না হলেও জাতি যেন তাদের ঘৃণা করতে পারে, এজন্য চিহ্নিত করা উচিত।
১৫ আগস্ট মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ইনার গার্ডেনে স্মৃতি চিরঞ্জীব সৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে এমন মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পাব না। কিন্তু তিনি যে আদর্শ রেখে গেছেন, আমরা এ আদর্শ বাস্তবায়ন করে তিনি যে উদ্দেশ্যে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন আমরা সে স্বাধীনতার লক্ষ্য বাস্তবায়িত করবো।
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজতে কমিশন গঠন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণভাবে নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত। সেটা উনারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এটা হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। এর পেছনে যে কুশীলবরা ছিল তাদের আইডেন্টিফাই করা উচিত, যাতে করে কিছু না হলেও জাতি যেন তাদের ঘৃণা করতে পারে।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও সেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি।
আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, তাদের বলতে চাই তার নেতৃত্বের গুণাবলীর মধ্যে ঘাটতি কতটা ছিল? যদি ঘাটতি না থেকে থাকে তাহলে একাত্তরকে স্বীকার করে নিয়ে তারপর বাংলাদেশে রাজনীতি করি। দেশের সংবিধান মেনে নিয়ে। যদি আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, বহুদলে বিশ্বাস করি, তাহলে সহনশীল হতেই হবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে একে অপরের প্রতি সহনশীল হতেই হবে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করবো আর সহনশীল হবো না, এটা গণতন্ত্রের চর্চা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা যদি একাত্তরকে মেনে নিই, সংবিধান মেনে নিই, গণতন্ত্রকে মেনে নিই, তারপর যদি রাজনীতি শুরু করা যায়, সমাজনীতি শুরু যায়, অর্থনীতি শুরু করা যায়, বিচার শুরু করা যায়, এবং গণতন্ত্রকে যদি আমরা ধারণ করি, তাহলে আমাদের ভিতর যে দূরত্ব আছে সেটা কমে আসবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ লোক রক্ত দিয়েছিলেন, যে কারণে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছেন, আমার মনে হয় সেই লক্ষ্যটা পূরণ করতে পারবো। আমার মতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় এই জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য। ঠিক সেই হিসাব নিকাশ করেই ৩ নভেম্বর যে হত্যাকাণ্ড করা হয়, যাতে জাতি দিন দিন ধ্বংসের দিকে যায়। সেই ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তারপর আমাদের এগুতে হবে। অন্যথায় বার বার আমরা এই বিপদের সম্মুখ হতেই থাকবো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি ফরিদ আহমেদ, বিচারপতি আশরাফুল কামাল, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার প্রমুখ।