বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরিয়ে নিতে শিল্পীকে জাদুঘরের চিঠি

0

জাতীয় জাদুঘর চত্বরে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত ‘মুক্তির অগ্নিপুরুষ’ নামের ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিতে শিল্পী উত্তম ঘোষকে চিঠি দিয়েছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। ভাস্কর্যটিতে বঙ্গবন্ধুর মুখাবয়ব, বৈশিষ্ট্যমন্ডিত চেহারা, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের অভিব্যক্তি সঠিকভাবে ফুটে ওঠেনি এবং এটির উপাদান, গুণগতমান, নান্দনিকতা ও শিল্পমান সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে ভাস্কর্যটি জাদুঘরের জন্য সংগ্রহ বা জাদুঘরের কোনো স্থানে প্রদর্শনের উপযুক্ত নয় বলেও চিঠিতে জানিয়েছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। অবশ্য, শিল্পী উত্তম ঘোষসহ গুণীজনরা ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিল্পী উত্তম ঘোষকে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিতে চিঠি দিয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন বলেন, ভাস্কর্যটি মানসম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমোদনেরও ব্যাপার রয়েছে। নানা রকম প্রক্রিয়া রয়েছে। এভাবে কেউ চাইলেই দিতে পারেন না।
এটির নির্মাতা উত্তম ঘোষ বলেন, ‘জাদুঘরের মহাপরিচালক ও সচিব ভাস্কর্যটি জাদুঘরে রাখার ব্যাপারে খুবই আগ্রহ দেখান। আমাকে লিখিতভাবে আবেদনও করতে বলেন। ভাস্কর্যটি কোথায় বসানো হবে তার জন্য একটি উপকমিটি করা হয়। সেই কমিটি এখন বলছে, এটি মানসম্পন্ন হয়নি।’

জাদুঘরের এমন চিঠির বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে কয়েকজন শিল্পবোদ্ধা জানান, ভাস্কর্যটি যথেষ্ট মানসম্পন্ন। এতে বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত সমসাময়িক অন্যান্য ভাস্কর্যের তুলনায় এটি যথেষ্ট মানসম্পন্ন হওয়ার পরও ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে সরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মলয় বালা ও ভাস্কর রাশা বলেন, ভাস্কর্যটি যথেষ্ট মানসম্পন্ন হয়েছে।

কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘ভাস্কর্যটি আমি প্রথম দেখি জাদুঘরের একটি অনুষ্ঠানে। তখন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে বলেছিলাম, এটি খুবই ভালো কাজ হয়েছে। এটি সংরক্ষণ করা উচিত। তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগবে। কিন্তু এখন শুনছি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য না পাঠিয়ে এখানেই কেউ কেউ মানসম্পন্ন হয়নি বলে সার্টিফিকেট দিয়ে এটাকে সরিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, এই ভাস্কর্যটি যথেষ্ট প্রাণবন্ত এবং এতে স্পষ্টতই বঙ্গবন্ধুর অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। এ রকম একটি নান্দনিক কাজকে যারা বাতিল করছে, তারা মূলত তাদের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দেখলেই যাদের গায়ে জ্বালা ধরে তারাই এমনটি করছে।’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী এবং গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে হাসুমণির পাঠশালা নামের একটি সংগঠন। সেখানে প্রদর্শিত হয় শিল্পী উত্তম ঘোষের ‘মুক্তির অগ্নিপুরুষ’ নামের এই ভাস্কর্যটি। উত্তম ঘোষ তখন ভাস্কর্যটি জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে উপহার দিতে চান। এটি কোথায় স্থাপন করা হবে সেজন্য উপকমিটিও গঠন করা হয়। ভাস্কর্যটি মানসম্পন্ন হয়েছে কিনা বিবেচনা করার জন্য সেই কমিটি সুপারিশ দিলে শিল্পী হাশেম

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *