চাঁদা না পেয়ে ছাত্রলীগ নেতার মাছ ছিনতাই !
স্থানীয় প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে জেলেদের মাছ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জিয়াউর রহমান (৩০) নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এ সময় মাছ ছিনতাইয়ে বাধা দিতে গেলে মতিয়ার রহমান (৪৮) নামে এক ইউপি সদস্যকে মারধর করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। পরে স্থানীরা আহত ওই ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনায় সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ভুক্তভোগী জেলে রহমত আলী বাদী হয়ে জিয়াকে প্রধান আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এর আগে ১৭ এপ্রিল শনিবার দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের তিস্তা নদীতে এ ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত জিয়াউর রহমান উপজেলার দোয়ানী পিত্তিফাটা এলাকার ২নং ওয়ার্ডের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে। আহত ইউপি সদস্য দোয়ানী পিত্তি ফাটা এলাকার ডা. মো. দবির উদ্দিনের ছেলে এবং উপজেলার গড্ডিমারী ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য।
ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী জেলে রহমত আলী উপজেলার দোয়ানী পিত্তিফাটা এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের মৃত পাহালি প্রামানিকের ছেলে এবং তিনি দোয়া তিস্তা ব্যারাজ মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি।
থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় অসহায় গরিব ২২ জন জেলেদের নিয়ে গঠিত দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। সেই সমিতির সভাপতি জেলে রহমত আলীর নেতৃত্বে ব্যারাজের পেছনের তিস্তা নদী থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন সমিতির সকলে।
প্রায় বছর দুই আগ থেকে চাঁদার জন্য জেলেদের নদী থেকে মাছ ধরতে বাধা দিয়ে আসতেছে জিয়া গং। এরই মাঝেই বেশ কয়েকবার চাঁদা টাকা না পেয়ে ঝামেলা করে জোর পূর্বক ২-৩ কেজি বৈরালী মাছ নিয়ে চলে যায়। টাকাতো দেইনা উল্টো ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন
১৯ এপ্রিল সোমবার তিস্তা ব্যারাজ এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের তিস্তা নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরছিল জেলেরা। এ সময় জিয়াসহ কয়েকজন সেখানে গিয়ে মাছ ধরতে বাধা দিয়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। এতে রহমত আলীসহ অন্যান্যরা চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
জিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে জেলেদের ধরা ৮শত টাকা মূল্যের বৈরালী মাছ জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে এতে বাধা দেন জেলে রহমত আলী। ফলে জিয়া গং রহমতের উপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে। এ সময় গড্ডিমারী ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমাস এগিয়ে এলে জিয়া ও তার দলবল তাকেও মারধর করেন।
এ বিষয়ে আহত ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন, ওই জিয়া প্রায় জেলেদের উপর অবিচার করে। জেলেরা অনেক কষ্টে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা দশ হাজার টাকা কই পাবে। উল্টো টাকা ছাড়া মাছ নিয়ে যায়। বাধা দেয়ায় রহমতকে মারধর করে। আমিও বাধা দিতে গিয়ে জিয়ার মারধরের স্বীকার হই। আমি জিয়ার বিচার চাই।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম শাহরিয়ার জিহান বলেন, জিয়া বর্তমান ছাত্রলীগের কেউ না। দোয়ানী শাখা ছাত্রলীগের কমিটির সাবেক সভাপতি। এখন ছাত্রলীগের কোনো পদে বা কমিটিতেই নেই। সে সম্ভবত যুবলীগের রাজনীতি করে।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।