গোর-এ শহীদ ময়দানে ২ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
১৫ আষাঢ় ১৪২০ বঙ্গাব্দ,
২৯ জুন ২০২৩ ইং,
জেলা প্রতিনিধিঃ
এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে এবার একসঙ্গে প্রায় দুই লাখ মুসল্লি ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের। মেঘ ও ঝিরঝির বৃষ্টির আবহে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা।
এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার ও মাঠ গোর-এ শহীদ ময়দানে এবার ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য একজোড়া বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।
দিনাজপুর ষ্টেশন সুপার একে এম জিয়াউর রহমান জানান, পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর এবং পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর বিশেষ ট্রেনগুলো সকাল সোয়া ৭টায় এবং পৌনে ৮টায় দিনাজপুর স্টেশনে এসে পৌঁছে এবং সাড়ে ৯টায় তা ছেড়ে যায়। মেঘ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল ৭টা থেকেই মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন এই ঈদগাহে। ঠিক সাড়ে ৮টায় শুরু হয় নামাজ। এখানে ঈমামতি করেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহসহ প্রধানমন্ত্রীর জন্য শান্তি কামনা করে করা হয় বিশেষ মোনাজাত। বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনতা।
নামাজ শেষে এই জামাতের প্রধান উদ্যোক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি জানান, সাধারণত ঈদুল আযাহায় মুসুল্লি কম হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর এবং পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর বিশেষ ট্রেনে বিনা পয়সায় মুসল্লিদের জন্য যাতায়াতের সুবিধা থাকায় মুসল্লির সংখ্যা খুব বেশি কমেনি। বৃষ্টিতেও দুই লাখ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করেছেন এই জামাতে। সফলভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। তিনি জানান, এশিয়ার মধ্যে বৃহৎ এই জামাত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিলাভের জন্য ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে, এ জামাতে অংশ নিতে পেরে খুশি মুসল্লিরা। তারা জানান, এবার ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে দূর-দূরান্তের মুসুল্লিরা এসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন তারা। মুসল্লিরা চান আগামী দিনে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা যেন প্রতি ঈদে করা হয়।
শুধু দিনাজপুর ও আশপাশের জেলা নয়, এই জামাতে অনেক দূর থেকে নামাজ আদায় করতে আসেন মানুষ। বিশেষ ট্রেনে নামাজ আদায় করতে ঠাকুরগাঁও থেকে আসা আবুল কালাম আজাদ (৬৫) ও রংপুর বদরগঞ্জ থেকে আমিনুল ইসলাম (৬৩)। তারা জানান, এই জামাতের কথা আগেই শুনেছেন। এখানে এসে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি তারা। বলেন, এতবড় মাঠ ও এতো মুসুল্লির সঙ্গে নিয়ে এটাই তাদের প্রথম নামাজ। তারা এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে এবং ব্যবস্থাপনা দেখে খুব খুশি।
বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের জন্য স্থাপন করা হয় শৌচাগার, ছিল ওজুর ব্যবস্থা। বসানো হয় মেডিক্যাল টিম। পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। সুষ্ঠুভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।