এমএস বিলেটের নতুন বাজার খুঁজে বের করার পরামর্শ
রফতানিমুখী এমএস বিলেট উৎপাদন এবং তা বিশ্ববাজারে রফতানি বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কার্যকর অবদান রাখতে ইস্পাত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের উদ্যোগে চীনে ২৫ হাজার মেট্রিক টন এমএস বিলেট রফতানির উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান শিল্পমন্ত্রী। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় দেশীয় ইস্পাত শিল্পের উৎপাদনক্ষমতা বেশি থাকলেও এটি পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বছরব্যাপী এমএস বিলেট উৎপাদন এবং রফতানির নতুন বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন।
করোনাকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিময়তার উদাহরণ টেনে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, কোভিড মহামারির মধ্যেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। বেসরকারি খাতের শিল্পোদ্যোক্তারাই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির নেপথ্যের নায়ক। তাদের মেধা, সৃজনশীল চিন্তা, নিরন্তর পরিশ্রম, সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের শিল্প খাত সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। স্বাধীনতার আগে বাঙালিদের কোনো ইস্পাত কারখানা না থাকলেও বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০০টি ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় আট মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্পাত ব্যবহারের পরিমাণ ৭.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
হুমায়ূন বলেন, ইস্পাত শিল্প খাত বিকাশের পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে শিল্প মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য করতে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জাহাজ ভাঙা কার্যক্রমকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙা শিল্প জোন গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৮ পাস করে এর আওতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙা শিল্প কারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব শিল্প-কারখানায় হংকং কনভেশন ২০০৯ অনুযায়ী ইয়ার্ড শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন এবং দেশেই ইস্পাত শিল্পের গুণগত মানসম্পন্ন কাঁচামাল সহজলভ্য হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্ক্র্যাপ আমদানি ও উৎপাদিত পণ্য রফতানিকালে দুবার ফ্রেইট খরচসহ অন্যান্য শুল্ক বাধা অপসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে বলে তিনি জানান।