ইন্ডিয়ান হাই কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে কামাল আহমেদ ও ফারজানা করিমের পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শকশ্রোতা

0
কামাল আহমেদ

ভারতিয় হাইকমিশন

মঙ্গলবার,
১৮ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,
০২ জুলাই ২০২৪ ইং,
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভারতীয় হাই কমিশন, ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার ঢাকা’র আয়োজনে গত ৩০ জুন ২০২৪, রবিবার, সন্ধ্যা সাতটায় ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো রবিঠাকুরের বর্ষা ও প্রেমের গান ও কবিতা নিয়ে চমৎকার একটি অনুষ্ঠান। সর্বমোট দশটি গান করেন শিল্পী কামাল আহমেদ,
প্রতিটি গানের পর বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নির্বাচিত দশটি কবিতার সমন্বিত যুগল পরিবেশনার বিষয় নির্বাচন প্রশংসার দাবী রাখে। শিল্পী কামাল আহমেদ সর্বপ্রথম পরিবেশন করেন- বর্ষণমন্দ্রিত অন্ধকারে এসেছি তোমারি এ দ্বারে, ফারজানা করিম আবৃত্তি করেন- বরষার রূপ হেরি মানবের মাঝে। পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয়- নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ জ্বালাইয়া যাও প্রিয়া, বহু যুগের ও পার হতে আষাঢ় এল, আমার পরাণ যাহা চায় তুমি তাই গো, বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল তুমি করেছো দান, আমার জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছ দান, এমন দিনে তারে বলা যায়. এমন ঘনঘোর বরিষায়, ভরা থাক্‌ স্মৃতিসুধায় বিদায়ের পাত্রখানি, ছায়া ঘনাইছে বনে বনে, গগনে গগনে ডাকে দেয়া; ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার, পরানসখা বন্ধু হে আমার’ অসাধারণ এই গানটি ছিল সমাপনী সুরেরভেলা। প্রতিটি গানের সুরের রেশ শেষ হতে না হতেই ফারজানা করিম আবৃত্তির মন্ত্রমুগ্ধ আবেগরসে দর্শকদের চিত্রকল্পের জগতে ভাসিয়ে নিয়ে যান। একে একে আবৃত্তি করেন- কথা ছিল এক- তরীতে কেবল তুমি আমি, আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে, সুন্দর, তুমি এসেছিলে আজ প্রাতে. অরুণ-বরণ পারিজাত লয়ে হাতে, তোমারে ডাকিনু যবে কুঞ্জবনে. তখনো আমের বনে গন্ধ ছিল, পত্রলেখা- দিলে তুমি সোনা-মোড়া ফাউণ্টেন পেন, কতমতো লেখার আসবাব; ;হঠাৎ দেখা- রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা, ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন’ এই কবিতাটি ছিল সর্বশেষ আবৃত্তি পরিবেশনা!

যন্ত্রশিল্পী হিসেবে ছিলেন- বেহালায় সুনীল চন্দ্র দাস, গিটারে নাসির আহমেদ, কিবোর্ডে রবিন্স চৌধুরী, তবলায় ইফতেখার আলম ডলার, অক্টোপ্যাডে বিদ্যুত রায়।

বর্ষণমূখর সন্ধ্যায় কাব্যসংগীতের বিরতিহীন অনবদ্য যুগল পরিবেশনা ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকায় আষাঢ় নিজের চিরচেনা বৈশিষ্ট্যে উপস্থিত থেকেছে দিনমান। কখনো গুড়িগুড়ি, কখনোবা ভারী বৃষ্টিতে টুইটুম্বর করেছে চারপাশ। ক্ষণে ক্ষণে আকাশে বিদ্যুতের ঝিলিক, ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টিবাতাস! চারপাশ বলে দিচ্ছে- ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে! এই বারণ উপেক্ষা করে নানা শ্রেণিপেশার দর্শক এসেছেন ধানম-ির ছায়ানট ভবনে গান শুনতে, কবিতা শুনতে; গান-কবিতার শিল্পসুধারসে কোন কোন দর্শক ভিজেছেন, কেউ কেউ অবগাহন করেছেন। দর্শকপূর্ণ ছিল দোতলার অর্ধবৃত্তাকার বৈঠকি আসনব্যবস্থার ঐতিহ্যবাহী মিলনায়নটি। সংগীতশিল্পী কামাল আহমেদ ও আবৃত্তিশিল্পী
ফারজানা করিম-এর এক ঘণ্টা বিশ মিনিটের যৌথ পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়েছেন আমন্ত্রিত দর্শক। নাগরিক ব্যস্ততার মাঝে কাব্য ও সংগীতের এমন আয়োজনের সুরসুধা আমাদের উজ্জীবিত করে, মনে প্রশান্তি এনে দেয়!

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *